খুলনার কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম বাহারুল ইসলামকে মালয়েশিয়া পালানোর সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৭ নভেম্বর) তাকে আটক করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে পাইকগাছা থানায় নেওয়া হয়।
অভিযোগ ও পলাতক থাকা:
গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর বাহারুল ইসলাম পরিবারসহ এলাকা ছেড়ে যান। সেদিন ক্ষুব্ধ জনতা তার বাড়ি ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তার বিরুদ্ধে জমি ও চিংড়ি ঘের দখল, সংখ্যালঘু নির্যাতনসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজ্জল হোসেন জানান, বাহারুলের বিরুদ্ধে ট্রলারে হামলার অভিযোগে ২৬ আগস্ট ফসিয়ার রহমান নামে এক ব্যক্তি মামলা করেন। এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
অঢেল সম্পদের মালিক:
বাহারুল ইসলাম দলীয় পদ ও ক্ষমতা ব্যবহার করে অঢেল সম্পদ গড়ে তোলেন।
- ২০১৯ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৪০ বিঘা জমি দখল করে প্লট আকারে বিক্রি।
- সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ১০ কাঠা জমি দখলে নিয়ে দোকান নির্মাণ।
- সরকারি ও ব্যক্তিগত ১৬ শতক জমিতে পাঁচতলা হাসপাতাল ভবন নির্মাণ।
সহিংসতা ও চাঁদাবাজি:
বাহারুলের নেতৃত্বে বিভিন্ন সময়ে মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ লাঞ্ছিত হয়েছেন।
- ৬০টি চিংড়ি ঘের দখল।
- সাংবাদিকদের ওপর হামলা।
- লোনাপানি উত্তোলনের পাইপ ভেঙে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ।
এলাকায় তার তাণ্ডবের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিক্ষুব্ধ মানুষের ক্ষোভ বাড়তে থাকে। তার গ্রেপ্তার এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এলেও, তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন অনেকে।