বহুল আলোচিত একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিলের রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করেছেন আদালত।
রোববার (১ ডিসেম্বর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। চার দিন ধরে শুনানি শেষে এই রায় ঘোষণা করা হয়।
বিচারিক আদালতের রায় ও পটভূমি
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালত এ মামলায় ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন লুৎফুজ্জামান বাবর ও আব্দুস সালাম পিন্টু। যাবজ্জীবনপ্রাপ্তদের মধ্যে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী ছিলেন।
নতুন রায়ের বিশ্লেষণ
হাইকোর্টের এই রায়ে বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করা হয়েছে এবং ২২ জন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে, কারণ মামলাটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
ঘটনার পেছনের ইতিহাস
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা-বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন এবং শেখ হাসিনাসহ কয়েকশ নেতা-কর্মী আহত হন।
এই হামলা বাংলাদেশের রাজনীতিতে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। অনেক আহত ব্যক্তি এখনও গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের যন্ত্রণা নিয়ে জীবনযাপন করছেন।
রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া
এই রায়ের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ এ রায়কে সুবিচারের ব্যত্যয় বলে দাবি করেছে, আর বিএনপি এটিকে তাদের নেতাকর্মীদের প্রতি অন্যায়ভাবে দেওয়া আগের রায়ের সংশোধন বলে দেখছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা এই রায়ের বিস্তারিত ব্যাখ্যা এবং এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করছেন। আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণ কী হবে, সেটিই এখন মূল বিষয়।