পাবেল হাসান.
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
প্রশাসনের বরাদ্দ সংকট, অবহেলা, এবং ভূমি দখলে পর্যটন হারাচ্ছে আকর্ষণ:
কিছু ইতিবাচক উদ্যোগে একসময় সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল। তবে যত্ন এবং সংরক্ষণের অভাবে এখন পর্যটন স্পটগুলো হারাচ্ছে জৌলুস। কোনোটি বন্ধ হয়ে গেছে, আবার কোনোটি দখলদারদের কবলে পড়েছে। এই পরিস্থিতি সঠিক পদক্ষেপের অভাবে দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে।
উপজেলার বর্তমান নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমান জানিয়েছেন, পর্যটন উন্নয়নে বরাদ্দ প্রয়োজন। তবে তা এখনো নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
একসময় সুনামগঞ্জের সবচেয়ে অবহেলিত উপজেলা ছিল বিশ্বম্ভরপুর। টাঙ্গুয়ার হাওরের জন্য তাহিরপুর, শিল্পকারখানার জন্য ছাতক, এবং হাসন রাজা, রাধারমণ, শাহ্ আব্দুল করিমের জন্য পরিচিত সুনামগঞ্জের অন্যান্য অঞ্চল। অথচ বিশ্বম্ভরপুর ছিল অপরিচিত।
২০২১ সালে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিউর রহমান জাদিদের উদ্যোগে করচার হাওর, পাহাড় বিলাস, হাওর ভিউ ক্যাফে, কৃষাণ চত্ত্বরসহ বেশ কিছু স্থাপনা গড়ে তোলা হয়। এগুলো দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিভিন্ন জেলা থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরে আসা পর্যটকরা এখানেও সময় কাটাতেন। স্থানীয় বাসিন্দারাও আত্মীয়-স্বজনকে নিয়ে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগে যেতেন।
২০২৩ সালের মার্চ থেকে পর্যটনকেন্দ্র “পাহাড় বিলাস”-এর ভূমি দখল শুরু হয়। প্রতি মাসে ভূমি দখলের ঘটনা বেড়েছে। পর্যটন স্পটগুলোতে প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নান্দনিকতাও কমে গেছে। এতে পর্যটকের সংখ্যা দিন দিন কমছে।
পর্যটন উদ্যোক্তা আলমগীর হোসেন বলেন,
"পাহাড় বিলাসের জায়গা এখন দখলে। সেখানে কোনো পর্যটক যেতে চান না। অথচ এখানে একসময় মানুষের ভিড় লেগে থাকত।"
পর্যটন প্রিয়রা দাবি করেছেন, বিশ্বম্ভরপুরকে পুনরায় সুনামগঞ্জের পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দুতে ফিরিয়ে আনতে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। ভূমি দখলমুক্ত করে স্পটগুলোর নান্দনিকতা পুনরুদ্ধার করতে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা এবং পর্যাপ্ত সরকারি বরাদ্দ।
উপজেলার এই সংকট সমাধানে স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণের সমন্বিত উদ্যোগের ওপরই নির্ভর করছে বিশ্বম্ভরপুরের পর্যটনের ভবিষ্যৎ।