আক্কাছ আলী, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার দিঘিরপাড় বাজার সংলগ্ন পদ্মার শাখা নদীতে সেতু না থাকায় লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ট্রলারই এখানকার মানুষের একমাত্র ভরসা। মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও চাঁদপুরসহ পাঁচ জেলার অন্তত ১১টি ইউনিয়নের দুই লাখেরও বেশি মানুষ প্রতিদিন এই নদী পার হয়ে তাদের গন্তব্যে পৌঁছান।
নদীর দুই পাড়ের মানুষ মুন্সীগঞ্জ সদর, টঙ্গিবাড়ী উপজেলা ও রাজধানী ঢাকায় যাতায়াতের জন্য ট্রলারের ওপর নির্ভরশীল। রাত-বিরাতে ট্রলার না পাওয়া, অতিরিক্ত ভাড়া, ঝড়-তুফানে ভোগান্তি ও সময়ক্ষেপণ এ পথে যাতায়াতকে অত্যন্ত কষ্টসাধ্য করে তুলেছে।
শরীয়তপুর নড়িয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. মাসুদ জমাদ্দার বলেন, “রাতের বেলা ট্রলার পাওয়া যায় না। পেলেও ভাড়া দিতে হয় ১০ গুণ বেশি। আমাদের মুন্সীগঞ্জের দিকে যাতায়াত বেশি, কিন্তু এ নদী পার হতে প্রতিদিন নানা সমস্যায় পড়তে হয়।”
কলেজ শিক্ষার্থী রিফাত খালাসীর ভাষ্যে, “নদীর পশ্চিমপাড়ের রাস্তাও অনেক খারাপ। মোটরসাইকেলে ২০০ টাকা ভাড়া দিয়ে দিঘিরপাড়ে আসতে হয়। ট্রলারের জন্য প্রতিদিন ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়।”
দিঘিরপাড় বাজারের খেয়াঘাটে প্রতিদিন শত শত মানুষ ট্রলারে পারাপার হচ্ছেন। কেউ মুন্সীগঞ্জ শহর বা ঢাকায় যাচ্ছেন, কেউবা বাজার করতে আসছেন। নদীর পাড়ের এই ট্রলারঘাটই তাদের জীবন ও জীবিকার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
টঙ্গিবাড়ী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী শাহ মোয়াজ্জেম জানান, দিঘিরপাড় বাজারের সংলগ্ন পদ্মার শাখা নদীতে ১০০ মিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এছাড়া নদীর পশ্চিম পাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ একটি আরসিসি সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে। প্রাথমিক মাটি পরীক্ষা ও সার্ভে সম্পন্ন করেছে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল। এখন নকশা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হবে।
সেতুটি নির্মাণ হলে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী, শরীয়তপুরের নওপাড়া, চরআত্রা, চাঁদপুরের হাইমচরসহ সীমান্তবর্তী গ্রামের মানুষ উপকৃত হবেন। তাদের যাতায়াতে সময় ও খরচ দুটোই কমবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, একটি সেতু তাদের জীবনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে। যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক কার্যক্রমও গতিশীল হবে। তবে দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।