মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব পরিবারে দিলে রাজি হননি মেয়ের পরিবার। এরই জের ধরে গত ২২ জানুয়ারী মেয়ের মা মেরিনা বেগম (৫০) কে একা পেয়ে এলোপাতাড়ি পিটুনি দিয়ে চার হাত পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উজ্জ্বল হায়াতের বিরুদ্ধে।
উজ্জ্বল হায়াত জয়পুরহাট সদরের দোগাছী ইউনিয়নের পূর্ব পেচুলিয়া গ্রামের সালাম মোল্লার ছেলে। সে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও সন্ত্রাসী মৃত পলচন এর সহযোগী ছিলেন। এলাকাবাসী ও পরিবারের বিবরনে জানা গেছে, জয়পুরহাট সদরের চকবরকত ইউনিয়নের দক্ষিণ খাসপাহুনন্দা গ্রামের আকবর আলী অভিযুক্ত উজ্জ্বল হায়াতের পুকুরে পাহারাদার হিসেবে কর্মরত ছিলো। কর্মচারির বেতন তার পরিবারের স্ত্রী মেরিনা বেগম ও মেয়ে শোভা (২২) গ্রহন করতো।
সেই সুবাদে উজ্জ্বল হায়াতের কর্মচারির বাড়িতে যাতায়াত ছিলো। দীর্ঘ যাতায়াতের কারনে কর্মচারি আকবর আলীর বাড়িতে অবিবাহিত মেয়ে শোভা আক্তার কে ভালো লেগে যায় তার। এরই একপর্যায়ে আকবর আলীর মেয়ে শোভা কে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন উজ্জ্বল হায়াত । কিন্তু শোভা নার্সিংয়ে অধ্যয়নরত থাকার কারনে সে রাজি হন না। উজ্জ্বল হায়াত বিবাহিত এবং দুই সন্তানের বাবা বলে জানা গেছে।পরে উজ্জ্বল হায়াত মেয়ের পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব দিলে মেয়ের মা মেরিনা বেগম রাজি হননা। এর কারনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় উজ্জ্বল হায়াতের।
এর আগে অভিযোগ উঠেছিলো শোভা আক্তার কলেজে যাতায়াতের পথে উজ্জ্বল হায়াত মাঝেমধ্যে উত্যক্ত ও বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখাতো। গত ১৬ জানুয়ারী শোভা আক্তার জয়পুরহাট শহর থেকে বাড়িতে আসার পথে জোরপূর্বক আটকিয়ে তৎক্ষনাৎ বিয়ের করতে জোর করেন উজ্জ্বল হায়াত। তখন তর্ক ও রাগারাগি করে বাড়িতে জান বাঁচিয়ে ফিরে আসেন শোভা আক্তার। পরে এবিষয়ে শোভা আক্তার চলতি জানুয়ারী মাসের ১৮ তারিখে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জয়পুরহাট যুব ক্যাম্পে উজ্জ্বল হায়াত সহ তার কয়েকজন সহযোগীকে বিবাদী করে অভিযোগ করেছিলো। তারপর থেকে আরো ক্ষোভের জন্ম নেয় উজ্জ্বল হায়াতের। কয়েকদিন পর আবারো শোভা আক্তার কে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন তার পরিবারে।
কিন্তু ছেলে পূর্ব বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক হওয়ায় মেয়ের মা কোনোমতেই রাজি নন। এরপর থেকে মেয়ের পরিবারে নানামুখী ভয়ভীতি দেখিয়ে আসতো।
গত ২২ জানুয়ারী মেয়ের মা মেরিনা বেগম বাড়ির সামনের মাঠে ছাগল আনতে গেলে তাকে একা পেয়ে উজ্জ্বল হায়াত ও তার কয়েকজন সহযোগী মিলে মেরিনা বেগমকে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটুনি দিলে মাটিতে পড়ে যায়। তার চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এলে ঘাতক উজ্জ্বল হায়াত ও তার সহোযোগিরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ভিকটিম মেরিনা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত উজ্জ্বল হায়াতের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এবিষয়ে জয়পুরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাহেদ আল মামুন বলেন, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ দিলে অবশ্যই তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।