স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
বগুড়ার ধুনট উপজেলার বেলকুচি গ্রামে ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে নিজের বসতবাড়ি ছেড়ে অন্য সন্তানদের বাড়িতে বসবাস করছেন বৃদ্ধ রমজান আলী ও তার স্ত্রী। জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ এবং পারিবারিক কলহের জেরে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
রমজান আলী, পেশায় অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক, ২০১৬ সালে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক তার চার ছেলে ও দুই মেয়ের মাঝে জমি বণ্টনের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ছোট ছেলে রাজ্জাকুল কবির বিদ্যুৎ এবং তার স্ত্রী ফৌজিয়া আক্তার বিথী এতে আপত্তি জানান এবং জমি রেজিস্ট্রেশনে অনুপস্থিত থাকেন। এরপর থেকেই বিদ্যুৎ ও তার স্ত্রীর সঙ্গে বৃদ্ধ বাবা-মায়ের বিরোধ বাড়তে থাকে।
রমজান আলী জানান, ছোট ছেলে বিদ্যুৎ ও তার স্ত্রী প্রায়ই তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করেন। এর ফলে বাধ্য হয়ে তিনি ও তার স্ত্রী অন্য সন্তানদের বাড়িতে আশ্রয় নেন। ২০২3 সালের ফেব্রুয়ারিতে জমি দেখতে বাড়ি গেলে বিদ্যুৎ ও তার স্ত্রী তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেন। এ ঘটনায় ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহায়তায় তিনি বাড়ি ত্যাগ করেন এবং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
রমজান আলী আরও অভিযোগ করেন, তার মেজ ছেলে রফিকুল ইসলাম শাহীনকে হয়রানি করতে বিদ্যুৎ একটি মিথ্যা শিশু অপহরণের মামলা দায়ের করেছেন।
রাজ্জাকুল কবির বিদ্যুৎ-এর ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার স্ত্রী ফৌজিয়া আক্তার বিথী জানিয়েছেন, শ্বশুর-শাশুড়িকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা। বরং তারা নিজের ইচ্ছায় মেয়ের বাড়িতে থাকছেন এবং উল্টো বিদ্যুৎ ও তার সন্তানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছেন।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইদুল আলম জানান, তিনি থানায় নতুন এসেছেন এবং এর আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো সম্পর্কে অবগত নন। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃদ্ধ বাবা-মা প্রশাসনের কাছে তাদের জমি এবং বসতবাড়িতে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন। পরিবারে চলমান এই সংঘাতের সমাধানে স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবে, এমনটাই প্রত্যাশা।