বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি:
নাটোরের বড়াইগ্রামে হিন্দু ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে সাবালিকা এক মেয়েকে বিয়ে করায় বিপাকে পড়েছে এক মুসলিম ছেলের পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার আটঘরিয়া গ্রামের মো. আশিকুর রহমানের পরিবারের সঙ্গে। তিনি ওই গ্রামের মো. আজিজুর রহমানের ছেলে।
ঘটনার বিস্তারিত:
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ জানুয়ারি আশিকুর রহমান পার্শ্ববর্তী লালপুর উপজেলার ধুপইল গ্রামের নীরেন্দ্রনাথ দাসের সাবালিকা কন্যা পূর্ণতা রানী দাস (ধর্মান্তরিত নাম মোছাঃ মরিয়ম খাতুন)-কে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক এবং আদালতের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করেন। নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট সম্পন্ন হয়।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওই নারীর পিতা লালপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন, যার ফলে আশিকুর রহমানের পরিবার আইনি জটিলতায় ও সামাজিক চাপের মুখে পড়েছে।
পরিবারের প্রতিক্রিয়া:
আশিকুরের পিতা মো. আজিজুর রহমান জানান,
"আমার ছেলে সাবালক এবং সে নিজ ইচ্ছায় বিয়ে করেছে। সে আমাদের জানায়নি, তবে মোবাইলের মাধ্যমে সব বৈধ কাগজপত্র আমাদের কাছে পাঠিয়েছে। কিন্তু মেয়ের বাবা থানায় অভিযোগ করায় আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি। আমি এর ন্যায্য প্রতিকার চাই।"
ধর্মান্তরিত মেয়ের বক্তব্য:
মোছাঃ মরিয়ম খাতুন এক ভিডিও বার্তায় জানান,
"আমি সাবালিকা এবং সুস্থ-সজ্ঞানে আমার পূর্ব ধর্ম (হিন্দু) থেকে আদালতের মাধ্যমে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছি। এরপর আমার পূর্ব পরিচিত আশিকুর রহমানের সঙ্গে ২৮ জানুয়ারি বিয়ে করি। আমাদের বিয়েতে আমার স্বামী বা তার পরিবারের কোনো প্ররোচনা নেই। আমি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আমার জীবন স্বাধীনভাবে গড়ে তুলতে চাই। আমার পিতা এ বিষয়ে আমার স্বামী বা তার পরিবারের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করতে পারেন না।"
পুলিশের বক্তব্য:
এ বিষয়ে ওয়ালিয়া ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ সুমন চন্দ্র দাস জানান,
"অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। ছেলেপক্ষ তাদের বৈধ কাগজপত্র জমা দিয়েছে। বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা হবে।"
আইনি জটিলতার কারণে এই বিয়ে ঘিরে এলাকায় নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। প্রশাসন বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে এবং যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।