এইচ বি সুমন আলী
বরগুনার তালতলীতে টিএনটি সড়কে চলমান নির্মাণকাজে ভেজাল ও নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ঘন ঘন অভিযোগ দেওয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে টিএনটি মোড়ে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
বিক্ষোভ চলাকালে “জনগণের টাকায় ভেজাল চলবে না”, “দুর্নীতিবাজদের শাস্তি চাই”, “তালতলীতে দুর্নীতির আস্তানা চলবে না”—এই স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও টিভি মেকার ধীরেন চন্দ্র বলেন,
"এই রাস্তা আমাদের প্রাণের সঙ্গে জড়িয়ে। কিন্তু এক চাপেই ইট গুঁড়ো হয়ে যাচ্ছে। এটা কোনো উন্নয়ন নয়, এটা আমাদের সঙ্গে নির্লজ্জ উপহাস। কাজের নামে দুর্নীতির হোলিখেলা চলছে।”
অপর এক গাড়িচালক সোনা মিয়া বলেন,
"এই রাস্তা ভেঙে গেলে প্রতিদিন মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হবে। স্কুলপড়ুয়া শিশু, অসুস্থ রোগী—সবার জন্যই এটা চরম দুর্ভোগের বিষয়। যারা এমন কাজ করছে, তারা জনগণের শত্রু।”
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং কিছু অসাধু প্রকৌশল কর্মকর্তার যোগসাজশে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে তড়িঘড়ি কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে। তাদের ভাষ্যমতে, বারবার অভিযোগ জানানো হলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে।
তরুণ সমাজকর্মী রাসেল হাসান বলেন,
"এই প্রকল্পে ২,৩০০ মিটারের কাজের জন্য ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু তারা অতি নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে কাজটি চালিয়ে যাচ্ছে। এতে সহযোগিতা করছে একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। আমরা আর মুখ বুজে থাকবো না। তদন্ত যদি পক্ষপাতদুষ্ট হয়, তাহলে উপজেলা অফিস ঘেরাও করা হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলবেই।”
এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন,
"আমরা গতকালই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘বরগুনার সাগর এন্টারপ্রাইজ’কে নিম্নমানের ইট সরিয়ে নিতে নোটিশ দিয়েছি। নির্দেশনা অমান্য করলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে এলাকাবাসী এই আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন। তাদের দাবি,
"নোটিশ নয়, এখন দরকার আইনগত পদক্ষেপ। জনগণের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। উন্নয়নের নামে দুর্নীতির জবাবদিহি চাই। যদি প্রয়োজন হয়, রাস্তাজুড়ে গর্জে উঠবে জনগণের স্লোগান—কিন্তু দুর্নীতিবাজদের ছাড় দেওয়া হবে না।”