মাসফিকুল হাসান, বেরোবি প্রতিনিধি:
বৃষ্টির দিনে যখন আমরা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে প্রকৃতির রূপ উপভোগ করি, তখনই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর-এর প্রশাসনিক ভবনের পাশের এক ফাঁকা জায়গায় মাথা নিচু করে কর্মযুদ্ধে ব্যস্ত কিছু নারী। চারপাশে কাদা, স্যাঁতসেঁতে বাতাস আর বৃষ্টির ধারায় মাটি ভিজে একাকার, কিন্তু তাতে থেমে নেই তাদের পরিশ্রম।
কারও হাতে ঘাস, কেউ ব্যস্ত সেই ঘাস বস্তায় ভরতে, কেউ নিচু হয়ে পরিশ্রমে রত—সবাই যেন জীবনযুদ্ধে একেকজন সাহসী সৈনিক।
এই মাঠ কোনো খেলার জায়গা নয়, বরং অবহেলিত একটি স্থান যা এখন পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। সেই কাজে নিয়োজিত এসব নারী শ্রমিকই আমাদের চোখে এক অনন্য উদাহরণ।
বৃষ্টিতে ভিজে, মাটিতে লুটিয়ে কাজ করেও তাঁদের মুখে নেই কোনো অভিযোগ। হয়তো ঘরে ফেলে আসা সন্তানের জন্য রাতের খাবার জোগাড় করতেই এই লড়াই। হয়তো ন্যূনতম মজুরির জন্যই দিনের শেষে ফিরে যাবেন ক্লান্ত শরীরে, ভেজা শাড়িতে, কিন্তু ভরপুর মনোবলে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, গবেষক কিংবা সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা যখন উন্নয়ন ও নীতিনির্ধারণ নিয়ে কথা বলি, তখন এই পরিশ্রমী নারীদের জীবন কি আমাদের দৃষ্টিসীমায় আসে? এ প্রশ্ন আমাদের বিবেককে নাড়া দেয়।
এই সংগ্রামী নারীদের জন্য চাই সম্মান, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং প্রাপ্য ন্যায্য পারিশ্রমিক।
তাঁদের প্রতিটি ঘামঝরা মুহূর্ত যেন আমাদের শিক্ষা দেয়—কাজই জীবন, আর সংগ্রামই তার চালিকা শক্তি।
এরা কেবল মজুরি ভিত্তিক শ্রমিক নন, এরা আমাদের সমাজের অবলম্বন। এই জীবনসংগ্রাম আমাদের হৃদয়ে ধারণ করাই মানবিক দায়িত্ব।