নুরুল হক মোরশেদ, জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দুটি মন্দিরে সংঘটিত চুরির ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। গোপন তথ্য, সিসিটিভি বিশ্লেষণ এবং গোয়েন্দা তৎপরতায় পেশাদার চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে মন্দির থেকে চুরি হওয়া বিভিন্ন পূজার উপকরণ ও চুরির কাজে ব্যবহৃত সরঞ্জাম।
গত ১২ জুন রাতে বড়লেখার পাখিয়ালা এলাকার শ্রী শ্রী উদ্ভব ঠাকুরের আখড়া মন্দির এবং ২৬ জুন রাতে দক্ষিণভাগ সার্বজনীন দেবস্থলী মন্দিরে চুরির ঘটনা ঘটে। উভয় ঘটনায় বড়লেখা থানায় পৃথক মামলা দায়ের করা হয়।
মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল)-এর দিকনির্দেশনায়, বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জের তত্ত্বাবধানে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে তদন্ত শুরু হয়। অভিযান চালিয়ে প্রথমে দক্ষিণভাগ বাজার রেললাইন এলাকা থেকে রুহেল আহমদ (৩০) নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গ্রেফতার করা হয় আরও পাঁচজনকে। তারা হলো:
আবু তায়েব আহমদ সাজু (২৮)
নুর হোসন (৪০)
জাকির হোসেন (৩১)
মোঃ আলাল মিয়া (৩৮)
শাহ আলী (৪২)
আটকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বড়লেখার মাধবগুল এলাকার শাহ আলীর ভাঙারি দোকান ও অন্যান্য স্থান থেকে উদ্ধার করা হয় চোরাই মালামাল। উদ্ধারকৃত সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে:
১১টি পিতলের ঘট
২টি কাসার ঘণ্টা
২টি পুষ্প থালি
১টি পিতলের প্রদীপ
৮টি কাসার থালা
৫টি কাসার বাটি
২ সেট চিপ কোষা
১টি পিতলের কলসি
এছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে চুরির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি।
মন্দির কর্তৃপক্ষ উদ্ধারকৃত সামগ্রী শনাক্ত করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। পুলিশ জানায়, তারা পেশাদার অপরাধী এবং এদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) নোবেল চাকমা জানান, এই ঘটনায় কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানির প্রমাণ মেলেনি। এটি সম্পূর্ণভাবে চুরির উদ্দেশ্যে সংঘটিত হয়েছিল। শনিবার বিকেলে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
পুলিশের এই সফল অভিযানে স্থানীয়রা স্বস্তি প্রকাশ করেছে এবং মন্দির কর্তৃপক্ষ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।