তালতলীতে প্রভাব খাটিয়ে গভীর নলকূপ সরানোর অভিযোগ
সেভ দ্যা চিলড্রেনের দেওয়া টিউবওয়েল ব্যক্তিগতভাবে দখলে, পানীয় জলে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ
তালতলী প্রতিনিধি
বরগুনার তালতলী উপজেলার ১নং পচাঁকোড়ালিয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বড়পাড়া গ্রামে প্রভাব খাটিয়ে সেভ দ্যা চিলড্রেনের দেওয়া একটি গভীর নলকূপ রাস্তার পাশ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, ছগির সিকদার, শানু সিকদার, নান্নু সিকদার, আলমগীর সিকদারসহ কয়েকজন মিলে সরকারি রাস্তার পাশে বসানো সেই নলকূপ ব্যক্তিগতভাবে বাড়ির ভেতর নিয়ে গেছেন।
স্থানীয় রোকেয়া বেগম জানান, “২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় সিডরের পর বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিলে (সেভ দ্যা চিলড্রেন) আমাদের নামে সরকারি রাস্তার পাশে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে। কিন্তু তারা এখন সেটি রাস্তা থেকে বাড়ির মধ্যে নিয়ে গেছে। আমরা নয়-দশটি পরিবার কীভাবে পানি খাবো?” স্কুলপড়ুয়া ইউসুফের মা অভিযোগ করেন, “আগে আমার ছেলে স্কুলে যাওয়ার পথে টিউবওয়েল থেকে পানি নিত, এখন আর নিতে পারে না। তারা জোর করে টিউবওয়েল সরিয়ে নিয়েছে।
” অভিযোগকারী জুয়েল সিকদার বলেন, “মানুষের চলার রাস্তা এবং পানি—এ দুটি সবার মৌলিক অধিকার। কিন্তু শানু-ছগিররা প্রভাব খাটিয়ে টিউবওয়েল বাড়ির ভেতর নিয়ে গিয়ে আমাদের পানির অধিকার কেড়ে নিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের কাছে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
” পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতুল কেঁদে কেঁদে জানায়, “আগে আমি স্কুলে যাওয়ার পথে পানি খেতাম। এখন আর পারি না। আমি চাই টিউবওয়েল আবার আগের জায়গায় বসানো হোক।” ১নং পচাঁকোড়ালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আঃ রাজ্জাক বলেন, “এটা আসলে অমানবিক কাজ। আমি লজ্জিত। এর সুষ্ঠু বিচার হওয়া উচিত।” পচাঁকোড়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার জানান, “২০০৮ সালে সেভ দ্যা চিলড্রেন জনগণের জন্য টিউবওয়েল স্থাপন করেছিল।
কিন্তু আজ সেটি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে—এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। রাস্তার পাশে থাকলে অনেক শিক্ষার্থী ও পথচারী উপকৃত হতো।” অভিযুক্ত শানু সিকদার বলেন, “আমাদের বাড়িতে লোকজন বেশি, তাই আমি টিউবওয়েল বাড়ির ভেতর এনেছি। বাইরে যারা পানি চাইবে, তারা নিজেরা একটি টিউবওয়েল বসাক।” তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ রোকনুজ্জামান খান বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”