মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
📌 অপরাধের রাজত্ব ভাঙতে দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
মুন্সিগঞ্জের মেঘনা নদীতে ভয় ও আতঙ্কের আরেক নাম কানা জহির। বাল্কহেড থেকে চাঁদা আদায়, মাদক ব্যবসা, চুরি-ডাকাতি, অবৈধ বালু উত্তোলন—সব অপকর্মেই রয়েছে তার নাম। ১৫টির বেশি মামলার আসামি হয়েও প্রশাসনের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন এই জলদস্যু।
অপরাধ জগতের উত্থান
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার আধারা ইউনিয়নের কালিরচর গ্রামের বাসিন্দা জহির ইসলাম (কানা জহির) জন্মগতভাবে ডান চোখে অন্ধ। বাবলা ডাকাতের মৃত্যুর পর থেকেই সে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে এবং নদীপথে অপরাধ সাম্রাজ্য গড়ে তোলে।
নদীপথে আধিপত্য
কানা জহিরের বাহিনী গজারিয়া, বকচর, ষাটনল, মোহনপুর ও চর আব্দুল্লা এলাকায় সক্রিয়। পুলিশ ও প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে বাল্কহেড থেকে চাঁদা তোলে, ইজারাকৃত বালু মহালের পাশে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে ফেলে। প্রতিদিনই নদীপথে গোলাগুলি ও সহিংসতা চলছে।
অস্ত্র ও স্পিডবোটসহ পালিয়ে যাওয়া
গত ১৯ ডিসেম্বর চাঁদপুরের মোহনপুর এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতির সময় নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ড অভিযান চালালে জহিরের বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ হয়। পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় জহির অস্ত্র ও স্পিডবোট ফেলে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বন্দুক ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে এবং মামলা দায়ের করে।
অভিযান চালিয়েও ব্যর্থ পুলিশ
এ ঘটনার পরদিনই মুন্সিগঞ্জ সদরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে একটি ব্যবসায়ীর স্পিডবোট ছিনতাই করে জহির বাহিনী। পুলিশকে জানানো হলেও এখনো তা উদ্ধার হয়নি।
ড্রেজার পুড়িয়ে দেওয়া
২১ ডিসেম্বর বকচর এলাকায় ইজারাকৃত বালু মহলে চাঁদা দাবি করে জহির বাহিনী। মাটি কাটার ড্রেজারের শ্রমিকরা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনটি ড্রেজারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশের প্রতিক্রিয়া
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ওসি এম সাইফুল আলম বলেন, “কানা জহির আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সর্দার। তার বিরুদ্ধে গজারিয়া, ষাটনল, মতলব উত্তর, চাঁদপুর ও লৌহজংয়ে ১৫টি মামলা রয়েছে। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা কঠিন। তবে আমরা যে কোনো উপায়ে তাকে গ্রেপ্তার করবো।”