বগুড়ার শাজাহানপুরে রনি ও দিশান নামের দুই শিশু শিক্ষার্থীর সততায় অভিভূত হয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহসিয়া তাবাসসুম। সততার বিষয়টি সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে অবহিত করতে তিনি তার প্রোফাইলে দিয়েছেন আবেগঘন এক স্ট্যাটাস।
গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) স্কুল শেষে বাড়ি ফেরার পথে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশে তারা কিছু টাকা কুড়িয়ে পায় শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়াস্থ শহীদ ক্যাডেট একাডেমির ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী দাস দিশান (১০) এবং একই প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ্ আল রনি (১১)। তারা টাকাগুলোর প্রকৃত মালিককে ফিরে দিতে না পেরে বেলা ১টার দিকে ইউএনও’র কক্ষে গিয়ে তার কাছে টাকাগুলো জমা দেয়।
এর পর পরই ইউএনও মুহসিয়া তাবাসসুম তার সরকারি ফেসবুক প্রোফাইলে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন। তাতে তিনি লিখেন এক অভূতপূর্ব ঘটনার সাক্ষী হলাম। স্কুল থেকে ফেরার পথে রনি ও দিশান নামের দুই শিশু শিক্ষার্থী মাঝিড়া ইউনিয়নের বরফকলের কাছে রাস্তায় কিছু টাকা কুড়িয়ে পায়। আশেপাশে কেউ না থাকায় ওরা টাকাটা কাকে দিবে বুঝতে পারেনি। তাই টাকাটা উপজেলা পরিষদে জমা দিতে আসে।
ছোট দুইটা মানুষ আজ যে মনুষ্যত্ববোধের পরিচয় দিল সেটা আজকাল অনেক পরিণত মানুষের মাঝেও বিরল। দাস দিশান’র বাবা নৃপেন্দ্র নাথ দাস একজন এনজিও কর্মকর্তা এবং মা ইতি বৈরাগী একজন গৃহিনী। ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার শিবনগর গ্রামে তাদের বড়ি। চাকুরির কারণে তারা শাজাহানপুর উপজেলার সাজাপুর কাগজিপাড়া গ্রামে ভাড়া বাড়িতে ৩ বছর ধরে বসবাস করছেন।
ইতি বৈরাগী বলেন, দিশানকে ছোট বেলা থেকেই নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। বাড়ির বাইরে গেলে রাস্তায় অসহায় মানুষ দেখলেই টাকা দিয়ে সহযোগিতার জন্য মা’র নিকট বায়না ধরে। অপরদিকে আব্দুল্লাহ্ আল রনি’র বাবা ব্রাজিল প্রবাসি বাদশা আলী। তার মা অঞ্জনা বেগম একজন গৃহিনী। অঞ্জনা বেগমের বাবার বাড়িও মাঝিড়ার সাজাপুর কাগজিপাড়া গ্রামে।
সে বাড়িতেই তারা বসবাস করেন। অঞ্জনা বেগম জানান, রনি ছোট বেলা থেকেই অত্যন্ত মিশুক প্রকৃতির। মুহুর্তের মধ্যেই সবার সাথে মিশতে পারে। বড়দের মান্য করে চলে। সহপাঠী কিংবা প্রতিবেশি সবার সাথে তার রয়েছে গভীর সখ্যতা। পারিবারিক ভাবেই সে এ শিক্ষা পেয়েছে।