October 16, 2025, 9:33 pm
শিরোনাম :
বরগুনা: পুলিশের অভিযানে মাদকসহ তিন যুবক আটক রাজবাড়ীর জামাতা ডা. বাসুদেব সাহার আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন গাজীপুর পূবাইলে অবৈধ ঘোড়া জবাই ব্যবসার মূল হোতা আটক মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে সাংবাদিকদের নৌ-ভ্রমণ ও সাংস্কৃতিক আয়োজন বাঁচতে চান সবার সহযোগিতায় কুমিল্লার দাউদকান্দিতে মাদক ব্যবসায়ীর হাতে নির্মমভাবে খুন যুবক গাজীপুরে এনা পরিবহনের বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় অটোযাত্রীর মৃত্যু উপজেলা উন্নয়ন কমিটির অফিসে লুটপাটের অভিযোগ রাজবাড়ী: বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ৭ গুণী শিক্ষকের সম্মাননা স্মারক প্রদান শহীদ ফেলানী হলের ছাত্রীদের অসন্তুষ্টি, বৈষম্যমূলক সুবিধা নিয়ে অভিযোগ

জামালপুরের ইসলামপুরে ঐতিহ্যবাহী কাঁসা শিল্প ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে

মোঃ শামসুল আলম

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি :

জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার উত্তর দরিয়াবাদের কাঁসারীপাড়া এক সময় ঐতিহ্যবাহী কাঁসা শিল্পের জন্য দেশব্যাপী পরিচিত ছিল। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও রপ্তানি হতো এই শিল্পের পণ্য। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে সেই জৌলুশ আজ হারিয়ে যাওয়ার পথে।

বিংশ শতাব্দীতে বিয়ে-সাদি, আকিকা কিংবা সামাজিক অনুষ্ঠানে কাঁসার জিনিসপত্র ছিল অপরিহার্য। হিন্দু পরিবারসহ সব শ্রেণির মানুষের কাছে প্রিয় ছিল কাঁসার তৈরী সামগ্রী। সারাদেশ থেকে ব্যবসায়ীরা ইসলামপুরে ভিড় জমাতেন কাঁসা সামগ্রী কিনতে।

ইতিহাসে উল্লেখ আছে, ১৯৪২ সালে ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগে লন্ডনের বার্মিংহামে আয়োজিত বিশ্ব হস্তশিল্প প্রদর্শনীতে ইসলামপুরের প্রয়াত শিল্পী জগৎচন্দ্র কর্মকার তার কাঁসার শিল্প প্রদর্শন করে স্বর্ণপদক অর্জন করেন। এরপর বিশ্বজুড়ে কাঁসা শিল্পের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।

তবে বর্তমানে টিন, প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের প্রতিযোগিতায় কাঁসার সামগ্রী টিকে থাকতে পারছে না। কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, উচ্চমূল্যে ক্রেতাদের অনীহা ও কারিগরদের ন্যায্য মজুরি না পাওয়ায় অনেকেই এই পেশা ছেড়ে যাচ্ছেন। ফলে এ শিল্প ধ্বংসের মুখে পড়েছে।

এখনো ইসলামপুরে ৭-৮টি প্রতিষ্ঠান কাঁসা শিল্পকে ধরে রাখার চেষ্টা করছে। শিল্প সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ, শুল্কমুক্ত কাঁচামাল আমদানির সুযোগ এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না পেলে এই ঐতিহ্যবাহী শিল্প একদিন ঢাকাই মসলিনের মতো বিলীন হয়ে যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, “আমরা আমাদের ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পকে হারাতে চাই না। স্থানীয় কারিগরদের তালিকা প্রণয়ন, প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা এবং বাজারজাতকরণে সহায়তার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।”

শিল্প মালিক উত্তম কর্মকার জানান, “এটি আমাদের উত্তরসূরীদের পাওয়া সম্পদ। সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা ছাড়া এ শিল্পকে রক্ষা করা সম্ভব নয়।”

স্থানীয়রা আশা করছেন, সরকার ও বেসরকারি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ইসলামপুরের ঐতিহ্যবাহী কাঁসা শিল্প আবারো পুরনো গৌরব ফিরে পাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


আমাদের পেজ লাইক করুন