চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ‘২৮ রাউন্ড গুলি’ চালানোর অভিযোগে তৌহিদুল ইসলাম ওরফে ফরিদ (৩২) গ্রেপ্তার হয়েছেন। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাতে সাতক্ষীরার কমলনগর এলাকা থেকে চান্দগাঁও থানা পুলিশ তাকে আটক করে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে দামপাড়া পুলিশ লাইন্সে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে নগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) মো. রইছ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে তৌহিদুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর কথা স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে পাঁচটি হত্যাসহ ১২টি মামলা রয়েছে।
রইছ উদ্দিন আরও বলেন, তৌহিদুল একটি পাকিস্তানি শুটারগান ব্যবহার করতেন এবং তার কাছে একাধিক অস্ত্র থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তৌহিদুলের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি, তবে তিনি একজন পেশাদার সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী বলে জানা গেছে।
এর আগে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অস্ত্রধারীদের মধ্যে র্যাব চারজন এবং নগর পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছিল। তৌহিদুলসহ এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হলেও ব্যবহৃত কোনো অস্ত্র উদ্ধার সম্ভব হয়নি।
চান্দগাঁও থানার শমশেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা তৌহিদুল সাবেক কাউন্সিলর এসরারুল হকের অনুসারী বলে পরিচিত। থানার এসআই আজহারুল ইসলাম জানান, গত ১৮ জুলাই বহদ্দারহাট এলাকায় তৌহিদুল একাই শুটারগান দিয়ে ২৮টি গুলি চালিয়েছেন। তার ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ জানান, আন্দোলনের সময় অস্ত্রধারীদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। অভিযুক্তরা ঘটনার পর আত্মগোপনে চলে গেলেও ভিডিও ফুটেজ এবং ছবি বিশ্লেষণ করে তাদের অবস্থান খোঁজা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে চট্টগ্রামে ১০ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হন। এসব ঘটনায় নিহতদের পরিবার নগরের বিভিন্ন থানায় এবং আদালতে অন্তত ২৫টি মামলা দায়ের করেছেন। মামলাগুলোতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশদাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।