ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস এর প্রধান বৈদেশিক বিষয়ক ভাষ্যকার গিডেয়েন র্যাচম্যানের পডকাস্টে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং তরুণদের ভবিষ্যৎ ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত দিয়েছেন।
ছাত্রদের নেতৃত্বে নতুন দল গঠনের সম্ভাবনা অধ্যাপক ইউনূস মনে করেন, দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তরুণ প্রজন্ম একটি শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারে। পডকাস্টে তিনি বলেন, “তরুণরা যদি দেশকে ‘প্রাণ’ দিতে পারে, তাহলে তাদের নিজেদের দল গঠনের সুযোগ দেওয়া উচিত। তারা ভালো কাজ করছে এবং দেশের মানুষ তাদের চিনে। নতুন দল গঠন করে তাদের একটি সুযোগ দেওয়া উচিত।” তিনি সতর্ক করে বলেন, দল গঠনের প্রক্রিয়ায় বিভক্তি এবং পুরোনো রাজনৈতিক শক্তির প্রভাবের ঝুঁকি রয়েছে। তবে তরুণদের রাজনৈতিক অভিপ্রায় স্বচ্ছ থাকলে, তারা দেশকে নতুন পথে এগিয়ে নিতে পারে।
নির্বাচনী পরিবেশ ও জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “জাতীয় ঐক্য ধরে রাখা জরুরি। তরুণদের রাজনৈতিক উদ্যোগগুলোও এই ঐক্য বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে।”
ভারতের ইসলামিস্ট শক্তি নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা দেশে ইসলামিস্টদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না। তরুণদের মধ্যে রাজনৈতিক আখের গোছানোর কোনো ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষা নেই। তারা তাদের রক্তের অর্জন রক্ষা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”
অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অধ্যাপক ইউনূস জানান, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, “তারা সহযোগিতা করতে আন্তরিক। আমরা অতীতের সরকারের কিছু ত্রুটির জন্য তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক সুযোগ।”
তরুণ প্রজন্মের ভূমিকার গুরুত্ব অধ্যাপক ইউনূসের মতে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে স্বচ্ছতা ও গণতান্ত্রিক চেতনার অভাব রয়েছে। তবে তরুণ প্রজন্মের উদ্যোগ ও সংগঠন দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।
উপসংহার অধ্যাপক ইউনূসের সাক্ষাৎকারে উঠে আসা তরুণদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক সম্ভাবনার বার্তা বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত। তিনি মনে করেন, সৎ ও সুশৃঙ্খল নেতৃত্বের মাধ্যমে তরুণরা দেশের রাজনৈতিক চিত্র পাল্টাতে পারে।