মোঃ মোশাররফ হোসেন
ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশনের (বিসিআইসি) আওতাধীন ছাতক সিমেন্ট কোম্পানীর পুনঃ বিক্রয় দরপত্রে ভয়াবহ জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। সর্বোচ্চ দরদাতা বিল্লাল এন্টারপ্রাইজ ৬০০ টাকার পে-অর্ডার জাল করে ৬ কোটি টাকার বানিয়ে জমা দেয়ায় তাদের দরপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।
গত ৫ মে ছাতক সিমেন্ট কোম্পানির পুরাতন ওয়েট প্রসেস কারখানার অব্যবহৃত ও অকেজো বিভিন্ন স্থাপনা এবং স্ক্র্যাপ মালামাল একত্রে এক লটে বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ২৫ মে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত দরপত্র জমা নেওয়া হয় এবং বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে দরপত্র খোলা হয়।
সিসিএলের বিভাগীয় প্রধান (বাণিজ্যিক) এর কার্যালয়সহ সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং গণপূর্ত বিভাগের কার্যালয়ে দরপত্র গ্রহণ করা হয়। ৫৭টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থেকে দরপত্র কেনা হলেও মাত্র ৮টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়।
সকল প্রতিষ্ঠানের দরপত্র অত্যন্ত স্বচ্ছতার সাথে সাংবাদিক, পুলিশ ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে খোলা হয়। সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হয় বিল্লাল এন্টারপ্রাইজ, যাদের দর ছিল ৭৫ কোটি ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু পরে তদন্তে দেখা যায়, তাদের জমা দেওয়া ৬ কোটি টাকার পে-অর্ডারটি আসলে মাত্র ৬০০ টাকার ছিল, যা তারা জালিয়াতির মাধ্যমে পরিবর্তন করে।
এ বিষয়ে ব্যাংকের শাখা প্রধান নিশ্চিত করেন, ২১ মে আমির আলী নামের এক ব্যক্তি মাত্র ৬০০ টাকার পে-অর্ডার কিনেছিলেন। এই পে-অর্ডারটিই পরে পরিবর্তন করে ৬ কোটি টাকার দেখানো হয়।
ছাতক সিমেন্ট কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রহমান বলেন, “এ ঘটনায় আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। পে-অর্ডার যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।”
বিল্লাল এন্টারপ্রাইজের দরপত্র বাতিল হওয়ায় এখন সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন বিসমিল্লাহ-সোনালী চেলা ইঞ্জিনিয়ারিং, যাদের প্রস্তাবিত দর ৭১ কোটি ১ লাখ টাকা।
অন্যান্য দরদাতারা হলেন:
মেসার্স রাকিব হাসান – ৬৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা
কর্ণফুলী রিভার্স ট্রান্সপোর্ট – ৬৩ কোটি ১৬ লাখ ৫৫৫ টাকা
শহীদ ট্রেডার্স – ৬১ কোটি টাকা
রাব্বি এন্টারপ্রাইজ – ৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৯৯ হাজার টাকা
সালেহ অ্যান্ড ব্রাদার্স – ৫১ কোটি টাকা
মা আয়রন পয়েন্ট – ৪৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা
জালিয়াতির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর অবস্থান এবং তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের প্রতিশ্রুতি স্থানীয় ব্যবসায়ী মহলে স্বস্তি ফিরিয়েছে।