রিপোর্ট: মোঃ বাদশা প্রামানিক,
নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে ধর্মীয় উসকানির চেষ্টা করেছিলেন এক পক্ষের সদস্যরা। প্রতিমা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করলেও পুলিশের নিরপেক্ষ তদন্তে ফাঁস হয়েছে পুরো চক্রান্ত। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের রুপাহারা গ্রামের বিপতি সিংহ রায় এবং কৃষ্ণ কুমার রায়—দুজন কাকাতো ভাই—দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে জমি ও বাঁশবাগান নিয়ে বিরোধে জড়িত। বিরোধের জেরে গত রবিবার (২০ জুলাই) দুপুরে বাশকাটা নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, এতে উভয় পক্ষের আটজন আহত হন।
এর কিছুক্ষণ পর রিপন কুমারের বাড়িতে অবস্থিত একটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর এবং পাশের একটি খড়ের ঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ধর্মীয়ভাবে উসকানি সৃষ্টির শঙ্কা জাগালে বিপতি সিংহ রায় ডিমলা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
তবে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অসঙ্গতি ধরা পড়লে গভীর অনুসন্ধানে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য—ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন কৃষ্ণ কুমার ও তার সহযোগীরা। প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এবং একটি রাজনৈতিক দলকে দায়ী করতে নিজেরাই প্রতিমা ভেঙে ও অগ্নিসংযোগের নাটক সাজিয়েছিলেন তারা।
তদন্ত শেষে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন—ডিমলা সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য কৃষ্ণ কুমার, স্বপন কুমার, রিপন কুমার এবং অনন্ত কুমার। সবাই রুপাহারা গ্রামের বাসিন্দা।
ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফজলে এলাহী বলেন,
“নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং বাকি জড়িতদের ধরতে অভিযান চলছে।”
ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। প্রবীণ কুমার বলেন,
“পরিবারিক বিরোধ থাকতেই পারে, কিন্তু সমাধান আদালতের মাধ্যমে হওয়া উচিত। ধর্মকে হাতিয়ার বানিয়ে ষড়যন্ত্র করা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য হুমকি।”