December 7, 2025, 7:33 am

নীলফামারী: তিস্তার পানি বাড়ছে, নতুন বন্যার আশঙ্কা

মিরাজ হুসেন প্লাবন

বাদশা প্রামানিক, নীলফামারী প্রতিনিধি ::
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল এবং ভারতের উত্তরবঙ্গে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে আবারও তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে ভারতের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও মেখলিগঞ্জ থেকে ধেয়ে আসা উজানের পানির চাপ বেড়েছে।

১৪ সেপ্টেম্বর (রবিবার) দুপুরে ভারতের মেখলিগঞ্জ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, যা বাংলাদেশের দিকে আসছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় তিস্তায় প্রায় ৩৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

রবিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত নীলফামারীর ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে ৯ ঘণ্টায় ১৩ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপৎসীমার (৫২.১৫ মিটার) মাত্র ০.৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, যেকোনো সময় তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। ইতোমধ্যেই তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে দেওয়া হয়েছে এবং ‘কমলা সতর্কতা’ জারি করা হয়েছে।

বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় পানি আরও বাড়তে পারে। এতে নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাট জেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

তিস্তা পাড়ের কৃষকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে নতুন করে উদ্বেগ। গত আগস্ট মাসের তিন দফা বন্যায় বহু কৃষকের আমন ধানক্ষেত নষ্ট হয়েছিল। নতুন করে চারা রোপণ করলেও ফের বন্যার হানা দিলে বড় ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, উজান থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে গজলডোবা ব্যারাজ দিয়ে দফায় দফায় পানি ছাড়া হচ্ছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।

ভারতের জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলায় টানা বৃষ্টির কারণে প্রচুর পানি জমে গেছে। শুধু গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে ২২৮ মি.মি., দার্জিলিংয়ে ১৯৯ মি.মি., কোচবিহারে ৩১১ মি.মি. ও আলিপুরদুয়ার জেলায় ৫৪০ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এ পানি নেমে এসে তিস্তা নদীকে উত্তাল করে তুলছে।

এ অবস্থায় তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চলের মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


আমাদের পেজ লাইক করুন