আক্কাছ আলী, মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি :
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের শম্ভুহালদারকান্দি এবং টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দিঘীরপাড় কান্দাবাড়ী গ্রামে পদ্মার ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন বসতভিটে ও ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েক ডজন পরিবার ঘর হারানোর শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর কিনার ঘেঁষে থাকা চায়না মল্লিকের (৬০) বসতভিটার পাশেই তীব্র ভাঙন চলছে। আতঙ্কে কাঁপছেন তিনি। কয়েক হাত দূরে তার ঘরটি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার অপেক্ষায়। ইতোমধ্যে ১০–১৫টি ঘর সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন স্থানীয়রা।
ভাঙনের শিকার রেখা মল্লিক বলেন, “কোথায় যামু? কয়টা জিওব্যাগ ফালাইলে ঘরটা হয়তো বাঁচাইতাম। কিন্তু এখন সারারাত মনে হয় ভিটা নদীতে তলায়ে যায়।”
অন্যদিকে স্থানীয় মলিন রায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা বারবার পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা প্রশাসনকে বলেছি। কিন্তু কেউ উদ্যোগ নেয় নাই। দুর্গাপূজা সামনে, অথচ আনন্দ নেই কারও মনে।”
শুধু শম্ভুহালদারকান্দি নয়, টঙ্গীবাড়ীর দিঘীরপাড় কান্দাবাড়ী ও আশপাশের মহেশপুর, সরদারকান্দি গ্রামেও প্রতিদিন নতুন নতুন বসতি নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি কিছু এলাকায় জিওব্যাগ ফেলা হলেও শম্ভুহালদারকান্দি ও দিঘীরপাড় কান্দাবাড়ীর বাসিন্দারা বঞ্চিত থাকায় ভাঙন আরও তীব্র হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শেখ এনামুল হক জানান, বর্তমানে এসব এলাকায় আলাদা কোনো প্রকল্প নেই। তবে অচিরেই জিওব্যাগ ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং দীর্ঘমেয়াদী সমাধানও বিবেচনায় রয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, দুর্গাপূজার আনন্দের বদলে এখন তারা দিন কাটাচ্ছেন ভাঙনের দুঃসহ বাস্তবতায়। প্রতিদিন পদ্মা নদীর গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে তাদের ভিটেমাটি, জীবিকা আর ভবিষ্যতের স্বপ্ন।