এইচ বি সুমন আলী, স্টাফ রিপোর্টার, বরগুনা:
বরগুনার তালতলী উপজেলার চন্দনতলা গ্রামে আজ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে কান্নায়। ঘরজুড়ে নেমে এসেছে মৃত্যুর নীরবতা। নিথর হয়ে ঘরে ফিরেছে দুই বছরের শিশু মাহাদী—যে সকালে ছিল প্রাণবন্ত, আর দুপুরে হয়ে উঠল স্মৃতি মাত্র।
ঘটনাটি ঘটে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে। মাহাদী প্রতিদিনের মতো খেলছিল বাড়ির উঠানে। তার মা ছিলেন পাশেই, মুরগির খামারে ব্যস্ত। ব্যস্ততার ফাঁকে মায়ের চোখ এড়িয়ে মাহাদী চলে যায় বাড়ির পাশে থাকা বগীর খালের ধারে।
কিছুক্ষণ পরই খেয়াল হয়—মাহাদী কোথায়? শুরু হয় খোঁজাখুঁজি, প্রতিবেশীদের সহায়তায় চারদিকে চিৎকার করে ডাকা, খালের পানিতে খোঁজ করা, অবশেষে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়।
তালতলী ফায়ার সার্ভিসের টিম দুপুর ১২টার দিকে খালের পানির নিচ থেকে উদ্ধার করে নিথর শিশুটিকে।
স্টেশন কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান বলেন, “শিশুটিকে ফিরে পেতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সে আর বেঁচে ছিল না। এটি আমাদের জন্যও অত্যন্ত বেদনাদায়ক।”
ঘটনাস্থলে ছুটে আসা মা তার সন্তানের নিথর দেহ দেখে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। বাবার ঠোঁট কাঁপছে, কিন্তু চোখে একফোঁটা জলও নেই—শুধু এক শূন্যতা।
এই মৃত্যু শুধুই একটি পরিবারের না, এটি একটি সামাজিক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি—যেখানে দরিদ্রতা, ব্যস্ততা ও নিরাপত্তাহীনতায় প্রতিনিয়ত ঝরে যায় এমন নিষ্পাপ প্রাণ।
উপসংহার:
মাহাদীর মৃত্যু আমাদের মনে করিয়ে দেয়—শিশুদের নিরাপত্তায় সামান্য অসতর্কতাও কত বড় দুর্ঘটনা ডেকে আনতে পারে। হয়তো খালের পাশে একটি নিরাপত্তা বেড়া থাকলে মাহাদী আজ বেঁচে থাকত। এখন শুধু কান্না আর দীর্ঘশ্বাসই স্মৃতি হয়ে রইল তার জন্য।