কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুড়িগ্রামের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে জেলার বিভিন্ন এলাকার চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে আংশিক প্লাবন ও নদীভাঙন। ইতোমধ্যে অনেক ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে, ফলে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
সোমবার (২ জুন) কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে,
তিস্তা নদীর পানি বর্তমানে বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পানি কমতে শুরু করেছে।
তবে ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানিও এখন পর্যন্ত বিপদসীমার নিচে রয়েছে।
প্লাবিত এলাকা ও ক্ষতির চিত্র
তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে
রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়ন,
উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া, থেতরাই ও বজরা ইউনিয়নের চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
পানিতে তলিয়ে গেছে বাদাম, মরিচ, পাটসহ রবি শস্যের ক্ষেত, যার ফলে আতঙ্ক বেড়েছে নদী তীরবর্তী মানুষদের মধ্যে।
চর বিদ্যানন্দ গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন,
“চরে দুই একর জমিতে বাদাম চাষ করেছিলাম। কয়েকদিন আগেও পানি উঠেছিল, কিন্তু ক্ষতি হয়নি। এবার পুরো ক্ষেতই পানিতে তলিয়ে গেছে।”
চর গোড়াইপিয়ার গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম জানান,
“ধারদেনা করে এক একর জমিতে বাদাম চাষ করেছিলাম। কিছু আগেই তুলে নিয়েছি, তবে এখন বাকি অংশ পানিতে ডুবে গেছে। এতে বড় ধরনের লোকসান হবে।”
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান,
“আগামী দুইদিন তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আরও কিছুটা বাড়তে পারে। তবে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করবে না, তাই আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।”
তিনি আরও বলেন,
“পানি বৃদ্ধির ফলে এখন পর্যন্ত ১৩টি স্থানে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে কাজ চলছে।”
এ পরিস্থিতিতে স্থানীয় কৃষক ও বাসিন্দারা দ্রুত সহায়তা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনায় প্রশাসনের দিক থেকে সহানুভূতির প্রত্যাশা করছেন।
—প্রস্তুত: মিরাজ হুসেন প্লাবন
রিপোর্টিং ডেস্ক, আগামী সকাল