June 16, 2025, 8:53 am

যাদের কোরবানি কবুল হবে না — জেনে নিন ৬টি কারণ

মিরাজ হুসেন প্লাবন

ইসলামিক ডেস্ক
কোরবানি ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত, যা আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাকওয়ার নিদর্শনস্বরূপ আদায় করা হয়। সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য এটি ওয়াজিব ইবাদত। তবে সঠিক নিয়ম অনুসরণ না করলে কোরবানি কবুল নাও হতে পারে। কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী যাদের কোরবানি কবুল হবে না, তাদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নির্দেশনা তুলে ধরা হলো:

✅ কোরবানির নির্দেশ কোরআনে
আল্লাহ বলেন:

“প্রত্যেক জাতির জন্য আমি কোরবানির নিয়ম করে দিয়েছি; যাতে তারা আল্লাহর নাম স্মরণ করতে পারে, যে সমস্ত জন্তু তিনি রিজিক হিসেবে দিয়েছেন তার ওপর।”
(সুরা হজ: ৩৪)

“তুমি তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে নামাজ আদায় করো এবং কোরবানি করো।”
(সুরা কাউসার: ২)

⚠️ যাদের কোরবানি কবুল হবে না
নিয়ত বিশুদ্ধ না হলে
যদি কোরবানির নিয়তে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারও উদ্দেশ্য থাকে, কিংবা শরিকদের মধ্যে কারো নিয়ত খাঁটি না হয়, তবে কারও কোরবানিই কবুল হবে না।

📖 আল্লাহ বলেন:

“আল্লাহর কাছে পশুর গোশত ও রক্ত পৌঁছে না, পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া।”
(সুরা হজ: ৩৭)

লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে কোরবানি
যদি কোরবানি শুধু লোক দেখানোর জন্য হয় বা নাম-খ্যাতি অর্জনের উদ্দেশ্যে হয়, তাহলে তা কবুল হবে না।

📖 কোরআনে বলা হয়েছে:

“নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকিদের (আল্লাহভীরুদের) কোরবানি কবুল করেন।”
(সুরা মায়েদা: ২৭)

কোরআন-সুন্নাহর বিধান লঙ্ঘন করলে
যদি কোরবানির পদ্ধতি কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী না হয় বা তাতে শরিয়তবিরোধী কিছু থাকে, তবে তা কবুল হবে না।

📖 আল্লাহ বলেন:

“যে তার প্রতিপালকের সাক্ষাৎ কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম করে এবং আল্লাহর ইবাদতে কাউকে শরিক না করে।”
(সুরা কাহাফ: ১১০)

4️⃣ ভাগ-বণ্টনে অসঙ্গতি থাকলে
গরু, উট বা মহিষ কোরবানির ক্ষেত্রে অংশীদারদের ভাগ সমান না হলে কোনো শরিকের কোরবানি সহিহ হবে না।

📌 যেমন: একজনের আধা ভাগ, আরেকজনের দেড় ভাগ—এভাবে হলে কোরবানি বাতিল।

5️⃣ শুধু গোশতের উদ্দেশ্যে কোরবানি
যদি কেউ কেবল গোশত পাওয়ার উদ্দেশ্যে কোরবানি করে, তাহলে সেটি ইবাদত হিসেবে গৃহীত হবে না।

📌 এমনকি এমন উদ্দেশ্য নিয়ে কাউকে শরিক করলে, অন্যদের কোরবানিও বাতিল হয়ে যেতে পারে।

6️⃣ হারাম টাকা দিয়ে কোরবানি করলে
অবৈধ বা হারাম উপার্জিত অর্থ দিয়ে কোরবানি করলে তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।

📖 কোরআনে বলা হয়েছে:

“হে মুমিনগণ! তোমরা ব্যয় করো হালাল ও পবিত্র উপার্জন থেকে।”
(সুরা বাকারা: ২৬৭)

🛐 উপসংহার
কোরবানি কেবল একটি সামাজিক উৎসব নয়, বরং এটি আল্লাহর নৈকট্য লাভের ইবাদত। তাই এটি হতে হবে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে, পবিত্র উপার্জনে, সঠিক নিয়মে এবং একনিষ্ঠ নিয়তে।

📿 আল্লাহ যেন আমাদের সকলকে একনিষ্ঠভাবে কোরবানি আদায়ের তাওফিক দান করেন। আমিন।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


আমাদের পেজ লাইক করুন