আক্কাছ আলী, মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি:
মুন্সিগঞ্জে দুটি মাদক মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি প্রবেশনে মুক্তি পেয়ে শহরের প্রধান সড়কের ১১টি স্পিডব্রেকারে সাদা রং করে দিয়েছেন। ঈদুল আজহার পরদিন থেকে শুরু হওয়া এ কাজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে শেষ হয়।
শুক্রবার (১৩ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের দক্ষিণ কোর্টগাঁও লিচুতলা থেকে পুরাতন কাচারী এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, পৌর ভবনের সামনে, প্রধান বাজার ও খালইস্ট এলাকায় মোট ১১টি স্পিডব্রেকারে সাদা রঙের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির মো. আবু হানিফ জানান, সদ্য বিদায়ী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে এই মহতী কাজটি সম্পন্ন হয়। তিনি জানান, দুর্ঘটনা প্রতিরোধে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে স্পিডব্রেকার রং করার প্রস্তাব দেন বিচারক, যা আসামিরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে গ্রহণ করেন। এরপর আদালত তাদের প্রবেশনে মুক্তি দিয়ে এই কাজের দায়িত্ব দেন।
গত মে মাসে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম দুটি পৃথক মাদক মামলায় চার আসামিকে এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানার রায় দেন। কিন্তু আসামিরা সমাজের জন্য ভালো কিছু করার সুযোগ চাওয়ায়, আদালত প্রবেশন মঞ্জুর করেন।
প্রবেশন পাওয়া আসামিরা নাম প্রকাশে অনিচ্ছা জানিয়ে বলেন, “আমরা সমাজের জন্য ভালো কিছু করতে পেরেছি, এটাই আমাদের জন্য গর্বের। ভবিষ্যতেও এমন কাজে অংশ নিতে চাই।”
স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন ও কাসেম মোল্লা জানান, আগে স্পিডব্রেকারগুলো চোখে না পড়ায় রাতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকত। এখন রং করার ফলে যান চলাচল অনেকটাই নিরাপদ হয়েছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. পারভেজ আলম বলেন, প্রবেশন আদেশ আদালতের একটি গুরুত্বপূর্ণ মানবিক ব্যবস্থা, যা সংশোধন ও পুনর্বাসনের সুযোগ সৃষ্টি করে। আদালতের এই সিদ্ধান্তকে মানবিক ও শিক্ষনীয় উদাহরণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা ট্র্যাফিক বিভাগের পরিদর্শক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “কারা রং করেছে জানি না, তবে যেভাবেই হোক এটি নিঃসন্দেহে মহৎ কাজ।”