তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
বরগুনার তালতলীর কচুপাত্রা বাজারে যেন চলছে আইন-শৃঙ্খলা উপেক্ষার উৎসব। সরকারি অনুমোদন ছাড়াই গড়ে উঠেছে গবাদি পশুর অবৈধ হাট, চলছে অতিরিক্ত খাজনা আদায়। আর এ চিত্রের পেছনে রয়েছে প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতা, দুই মাসেও নেয়া হয়নি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা।
জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে তালতলী উপজেলা প্রশাসন কচুপাত্রা বাজারের ইজারা দেয় ফরহাদ তালুকদারের কাছে। কিন্তু চুক্তিতে গবাদি পশুর হাট বসানোর অনুমতি ছিল না। তবুও ফরহাদ তালুকদার ও তার সহযোগীরা—উপজেলা বিএনপির সদস্য ইদ্রিস হাওলাদার, নিজাম উদ্দিন সরদার, যুবদল নেতা কাওসার হাওলাদার, নয়া মিয়া হাওলাদার ও ইউপি সদস্য সোহেল মিয়া—প্রতিনিয়ত প্রভাব খাটিয়ে রোববারে পশুর হাট বসাচ্ছেন।
অভিযোগ রয়েছে, প্রতি গরুতে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত খাজনা আদায় করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় খামারি ও ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বহুবার প্রতিবাদ করেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন,
“এটি বৈধ হাট নয়। ইজারার নামে বিএনপি নেতাদের একটি সিন্ডিকেট চাঁদা তুলছে। আমি জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি, কিন্তু এখনও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইজারাদার ফরহাদ তালুকদার বলেন,
“আমি হাট বসিয়েছি, তবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।”
এ বিষয়ে তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা জানান,
“অভিযোগ পেয়েছি, যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সফিউল আলম বলেন,
“তালতলীর ইউএনওকে তদন্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।”
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্দেশনা দিলেই দায়িত্ব শেষ নয়—দরকার দ্রুত বাস্তবায়ন। তাদের দাবি, প্রশাসনের নীরবতায় বিএনপি নামধারী একটি প্রভাবশালী চক্র কচুপাত্রাকে রীতিমতো অবৈধ পশুর হাটে রূপান্তর করেছে, যা শুধু জনগণ নয়, বিএনপিকেও কলঙ্কিত করছে।
এলাকাবাসীর দাবি, প্রশাসন যেন দ্রুত অভিযান চালিয়ে অবৈধ হাট বন্ধ করে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে।