তরিকুল ইসলাম, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি:
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি শিক্ষার্থীদের বাবা-মাকেও অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ:
বিভাগীয় শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ড. মোহাম্মদ আসলাম শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথায় কথায় “বেয়াদবের বাচ্চা,” “জুতা দিয়ে পেটাব,” “লাথি মেরে ফেলে দেব” ইত্যাদি অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেন। নারীদের প্রতিও রয়েছে খারাপ আচরণের অভিযোগ।
এক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জানান, “তার আচরণে আমরা এতটাই ভীত যে কোনো প্রতিবাদ করার সাহস পাই না। তিনি সব সময় হুমকি দেন, পাশ করতে দেবেন না।”
অন্য এক শিক্ষার্থী বলেন, “ক্লাসে কোনো প্রশ্ন করলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, তুমি কি আমার থেকে বেশি বোঝো? শিক্ষার্থীদের কথায় কথায় হেয় করেন।”
মার্ক টেম্পারিং ও অন্যায় আচরণের অভিযোগ:
ড. আসলামের বিরুদ্ধে মার্ক টেম্পারিংয়ের অভিযোগও পাওয়া গেছে। এক শিক্ষার্থী জানান, সেমিস্টার পরীক্ষায় ভালো উত্তর দেওয়ার পরও তিনি মাত্র ২০ নম্বর পেয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক তাকে “বেয়াদব” বলে গালিগালাজ করেন।
মাস্টার্সের এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, “শারীরিক অসুস্থতার কারণে ক্লাসে যেতে না পারায় তিনি আমাকে অপমান করেন। তার আচরণ শিক্ষকসুলভ নয়।”
শিক্ষকের বক্তব্য:
অভিযোগ অস্বীকার করে ড. মোহাম্মদ আসলাম বলেন, “আমি গালিগালাজ করিনি। শিক্ষার্থীরা অপরাধ করলে শাসন করেছি। এটা শিক্ষকের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। শিক্ষার্থীরা আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে দোষারোপ করছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া:
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ এনামউজ্জামান বলেন, “এই ধরনের অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা যদি সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ করে, তাহলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব। তবে অভিযোগের অভাবে আমাদের পক্ষে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব নয়।”
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ করতে ভয় পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিয়ম অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তবে আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করব।”
শেষ কথা:
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণের এই অভিযোগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয় কি না, তা সময়ই বলে দেবে। তবে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সবার সহযোগিতা জরুরি।