June 16, 2025, 5:46 am

সুস্থ থাকতে কীভাবে খাবেন?” — ৫ সহজ পরামর্শ পুষ্টিবিদদের

মিরাজ হুসেন প্লাবন

লাইফস্টাইল ডেস্ক | আগামী সকাল

ভেজাল ও প্রক্রিয়াজাত খাবারে ভরা এই যুগে সুস্থ থাকতে চাইলে খাদ্যাভ্যাসে আনতে হবে সচেতনতা ও সামঞ্জস্য। “স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া আসলে খুব জটিল কিছু নয়”— এমনটাই মত পুষ্টিবিদদের। খাদ্য গ্রহণে কিছু সাধারণ নিয়ম অনুসরণ করলেই পাওয়া সম্ভব দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সুরক্ষা।

‘ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’-এর এক আলোচনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত পরামর্শ দিয়েছেন শিকাগোর ‘সিম্পল মিল্স’–এর প্রধান নির্বাহী ক্যাটলিন স্মিথ, যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ ব্রিজিট জেইটলিন এবং চিকিৎসক রুভিনি উইজেটিলাকা।

নিচে তুলে ধরা হলো পুষ্টিবিদদের পরামর্শে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের কয়েকটি কার্যকরী নিয়ম:

🍚 ১. সাধারণ উপকরণই যথেষ্ট উপকারী
পুষ্টিবিদদের মতে, সুস্থ থাকতে হলে প্রথমেই কমাতে হবে মোড়কজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাবারের উপর নির্ভরতা। এসব খাবারে রাসায়নিক সংরক্ষণ উপাদান থাকায় তা দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যহানির কারণ হতে পারে।

সাধারণ, প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি খাবার যেমন—ভাত, ডাল, সবজি ইত্যাদি নিয়মিত গ্রহণ করলেই শরীর পায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি।

🥬 ২. উদ্ভিজ্জ খাবারে বাড়ুক আগ্রহ
ক্যাটলিন স্মিথ বলেন, বেশি করে শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (USDA) অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন অন্তত আড়াই কাপ শাকসবজি ও দুই কাপ ফল খাওয়া উচিত। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং মৃত্যুঝুঁতিও হ্রাস পায়।

😊 ৩. খাবার হওয়া চাই আনন্দময়
পুষ্টিবিদ ব্রিজিট জেইটলিন বলেন, “খাবার এমন হওয়া উচিত যা খেতে ভালো লাগে ও ইচ্ছা করে।”
স্বাস্থ্যকর খাবারের অর্থ এই নয় যে তা হতে হবে মুখরোচনাহীন। কেউ যদি কপি খেতে না পছন্দ করে, তাহলে গাজর, শসা বা অন্যান্য বিকল্প সবজি বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

চকোলেট চিপস বা বিস্কুট খেতে মন চাইলে তা মাঝেমধ্যে গ্রহণ করাও দোষের কিছু নয়—শর্ত শুধু একটাই, পরিমাণ ও ভারসাম্য বজায় রাখা।

📅 ৪. খাদ্য পরিকল্পনায় সচেতনতা জরুরি
জেইটলিন বলেন, “পরিকল্পিত খাদ্যাভ্যাস যদি দমনমূলক মনে হয়, তাহলে তা কখনোই দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর হবে না।”
খাদ্য পরিকল্পনা মানে নির্দিষ্ট সময় ও উপায়ে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়া, যেন আচমকা ক্ষুধা মেটাতে অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণে বাধ্য না হতে হয়।

বাইরে খেতে গেলেও স্বাস্থ্যকর বিকল্প বেছে নেওয়ার অভ্যাস গড়তে হবে।

💧 ৫. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার পরামর্শ দেন জেইটলিন।
তিনি বলেন, “শরীর যখন পানিশূন্য হয়, তখন অনেক সময় তা ক্ষুধার সংকেত হিসেবে প্রতিভাত হয়। এতে আমরা অপ্রয়োজনীয়ভাবে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলি, বিশেষ করে শর্করা জাতীয় খাবার।”

তাই ক্ষুধা লাগার সময় প্রথমে এক গ্লাস পানি পান করে নেওয়াই সবচেয়ে ভালো।

✅ উপসংহার
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা কঠিন নয়, বরং এটি ছোট ছোট সিদ্ধান্তের ফল। নিয়মিত পানি পান, প্রাকৃতিক খাবার গ্রহণ, উদ্ভিজ্জ খাদ্যের প্রতি আগ্রহ এবং মানসিক প্রশান্তির কথা মাথায় রেখে খাবার নির্বাচন করলে শরীর ও মন—উভয়ই থাকবে সুস্থ।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


আমাদের পেজ লাইক করুন