কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি:
আজ ২৯ জুন, আধুনিক বাংলা সাহিত্যের পথিকৃৎ ও বিদ্রোহী কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৮৭৩ সালের এই দিনে তিনি কলকাতার আলিপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই সাহিত্যপুরুষ। জন্মসূত্রে তার নাম ছিল মধুসূদন দত্ত। পিতা ছিলেন জমিদার রাজনারায়ণ দত্ত এবং মাতা জাহ্নবী দেবী। বাল্যকালে তিনি মায়ের কাছে রামায়ণ, মহাভারত ও পুরাণের সঙ্গে পরিচিত হন এবং ইমাম মুফতি লুৎফুল হকের কাছে বাংলা, ফারসি ও আরবি ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন।
১৩ বছর বয়সে কলকাতায় গিয়ে হিন্দু কলেজে (বর্তমানে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি) ভর্তি হন। সেখানে তিনি অধ্যক্ষ ডি. এল. রিচার্ডসন এবং ডিরোজিওর চিন্তাধারায় প্রভাবিত হন। ১৮৫৩ সালে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করলে তার নামের সঙ্গে যুক্ত হয় ‘মাইকেল’।
প্রথমদিকে তিনি ইংরেজি ভাষায় সাহিত্যচর্চা শুরু করলেও পরে মাতৃভাষা বাংলার দিকে ফিরে আসেন। বাংলা সাহিত্যে সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রবর্তনের মাধ্যমে তিনি সাহিত্য জগতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেন। তার সবচেয়ে বিখ্যাত রচনা ‘মেঘনাদবধ কাব্য’, যা অমিত্রাক্ষর ছন্দে লেখা এবং রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে রচিত এক মহাকাব্য।
তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাবলি:
📚 কাব্যগ্রন্থ:
মেঘনাদবধ কাব্য
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য
বীরাঙ্গনা কাব্য
ব্রজাঙ্গনা কাব্য
চতুর্দশপদী কবিতাবলী
দ্য ক্যাপটিভ লেডি (ইংরেজি)
🎭 নাটক ও প্রহসন:
শর্মিষ্ঠা
কৃষ্ণকুমারী
পদ্মাবতী
বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ
একেই কি বলে সভ্যতা
মায়া-কানন
তার সাহিত্যকর্ম শুধু সাহিত্যপ্রেমী নয়, ইতিহাস ও সংস্কৃতির গভীর অনুসন্ধানকারীদের কাছেও চিরন্তন প্রেরণার উৎস হয়ে আছে। বাংলা সাহিত্যের এই মহান কবির মৃত্যুবার্ষিকীতে আজ জাতি স্মরণ করছে তার অবদান ও কীর্তিকে গভীর শ্রদ্ধায়।