জেলা প্রতিনিধি, রাজবাড়ী
মোঃ জাহিদুর রহিম মোল্লা:
রাজবাড়ী জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দুই কর্মকর্তা—পরিদর্শক আবু বকর ছিদ্দিক ও উপ-পরিদর্শক মোঃ নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে এক পঞ্চাশোর্ধ্ব নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী নারীর নাম জবেদা খাতুন (৫৫), তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা ও মৃত এলেম খাঁর স্ত্রী।
ঘটনার পর থেকেই এলাকাজুড়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বিচারের দাবি উঠেছে সর্বমহলে।
ভুক্তভোগী জবেদা খাতুন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ১৯ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তিনি গোয়ালন্দ ঘাট থানাধীন দৌলতদিয়া পুরাভিটা এলাকায় আত্মীয়ের খোঁজ নিতে যান। এ সময় পরিদর্শক আবু বকর ছিদ্দিক, উপ-পরিদর্শক নাসির উদ্দিন ও আরও ৫–৬ জন ব্যক্তি তাকে পেছন থেকে ধরে ফেলে। কোনো মামলা বা ওয়ারেন্ট ছাড়াই তারা তার শরীরের পোশাক ছিঁড়ে বিবস্ত্র করে এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন চালায়।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, ভুক্তভোগী প্রতিবাদ করলে তারা লাঠি, ঘুষি ও কিল মেরে নির্যাতন চালায় এবং শরীরের স্পর্শকাতর স্থানেও আঘাত করে। পরে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায় এবং বলেন,
“আজ বেঁচে গেলি, আবার একা পাইলেই তোকে মাদক দিয়ে চালান করে দিব।”
জবেদা খাতুনের অভিযোগে আরও উল্লেখ আছে, অভিযুক্ত কর্মকর্তারা নিয়মিত দৌলতদিয়া এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা মাসোহারা নেয়, আর টাকা না দিলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-পরিদর্শক মোঃ নাসির উদ্দিন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“আমি ১৯ জুন ডিউটিতে থাকলেও কোনো নারীর সঙ্গে এমন কোনো ঘটনার সম্পৃক্ততা নেই।”
পরিদর্শক আবু বকর ছিদ্দিককে ফোনে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং বলেন,
“অভিযোগের কপি আমি পেয়েছি, আমার সঙ্গে ফালতু কথা বলবেন না।”
এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু আবদুল্লাহ জাহিদ বলেন,
“আমি এখনও অভিযোগের কপি হাতে পাইনি। আপনার মাধ্যমেই শুনছি। কপি হাতে পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনায় মানবাধিকার সংগঠন ও সচেতন মহল ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।