মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
আলুর অন্যতম প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র মুন্সীগঞ্জে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। তাদের অভিযোগ, উৎপাদন খরচ কেজিতে ১৮ টাকা হলেও বাজারে কৃষক পর্যায়ে আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৩ টাকায়। ফলে তারা ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়ছেন।
এ বছর মুন্সীগঞ্জে ৩৪ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। তবে ফলন ভালো হলেও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে চরম সংকটে পড়েছেন কৃষকরা। হিমাগারের ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই বাধ্য হয়ে পানির দামে আলু বিক্রি করে দিচ্ছেন। কৃষকদের দাবি, মধ্যস্বত্বভোগীরা হিমাগারভিত্তিক সিন্ডিকেট তৈরি করে ফায়দা লুটছে।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, গত বছর প্রতি ৫০ কেজির আলুর হিমাগার ভাড়া ছিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। এবার তা বাড়িয়ে ৪০০ টাকা করা হয়েছে। এতে প্রতি কেজিতে সংরক্ষণ খরচ দাঁড়াচ্ছে ৮ টাকা, যা গতবারের তুলনায় অনেক বেশি। কৃষকদের দাবি, সরকারি উদ্যোগে হিমাগার চালু করলে এই সংকট নিরসন সম্ভব।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, হিমাগার মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে ভাড়া রিভাইসের আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সামির হোসেন সিয়াম স্বীকার করেছেন যে ভাড়া কিছুটা বেশি হয়ে গেছে এবং বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
জেলায় বর্তমানে সচল ৫৮টি হিমাগার রয়েছে, যার ধারণ ক্ষমতা ৫ লাখ ৪০ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন। কিন্তু চলতি মৌসুমে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে ১০ লাখ মেট্রিক টন। ফলে সংকট আরও প্রকট হয়েছে।
কৃষকরা বলছেন, সরকার যদি আলুর ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করে দিতো এবং হিমাগার সংরক্ষণের খরচ নিয়ন্ত্রণ করতো, তাহলে তারা লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পেতেন।