বৈশ্বিক ডেস্ক
আমাদের দৈনন্দিন ভাষায় ‘গাধা’ শব্দটি যেন একটি ব্যঙ্গাত্মক অপবাদে পরিণত হয়েছে। ভুল করলেই তুলনা টানা হয় গাধার সঙ্গে—”গাধার মতো কাজ করো না”, “গাধার মতো কথা বলো না”—এসব বাক্য যেন প্রায় পরিচিত। অথচ আজকের দিনটিতে এই প্রাণীটিকে নিয়ে একটু ভিন্নভাবে ভাবার দিন। কারণ আজ ৮ মে, বিশ্ব গাধা দিবস।
গাধা—এই প্রাণীটিকে আমরা যতটা বোকা ভাবি, প্রকৃতপক্ষে গাধা ঠিক ততটাই পরিশ্রমী, সহনশীল এবং মানবসভ্যতার কাজে নিবেদিত এক জীবন্ত প্রমাণ। মরুভূমির কঠিন বাস্তবতা থেকে শুরু করে পাহাড়ি পথ—সবখানেই সে মানুষের বোঝা বইছে বছরের পর বছর। নানা কাজে ব্যবহৃত হলেও খুব কম মানুষই গাধাকে সম্মান করে।
🌍 কিভাবে এলো বিশ্ব গাধা দিবস?
এই দিবসের ধারণা প্রথম আসেন রাজিক আর্ক নামের এক বিজ্ঞানীর মাথায়। মরুভূমির প্রাণীদের নিয়ে গবেষণায় আগ্রহী এই বিজ্ঞানী প্রায় এক দশক আগে লক্ষ করেন, মানুষ গাধার উপর নির্ভর করলেও তার কোনো সম্মান দেয় না। সেই বোধ থেকেই তিনি একটি ফেসবুক পেজ খুলে গাধার বিভিন্ন প্রজাতি ও তথ্য প্রচার শুরু করেন। অবশেষে ২০১৮ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন শুরু হয় ‘বিশ্ব গাধা দিবস’।
🐴 গাধা কি সত্যিই বোকা?
অনেকে মনে করেন গাধা বোকা। কিন্তু গবেষণা বলছে, গাধা একটি অত্যন্ত সহনশীল ও কঠোর পরিশ্রমী প্রাণী। তারা কার্গো টানে, গাড়ি চালায়, কারখানায় কাজে লাগে, এমনকি ঘণ্টায় ৩১ মাইল পর্যন্ত গতিতে চলতেও পারে। তাদের গড় আয়ু ৫০ থেকে ৫৪ বছর।
🌿 অতীত থেকে বর্তমান
আধুনিক গাধার দুই পূর্বপুরুষ—সোমালি ও নুবিয়ান বন্য গাধা। এরা আফ্রিকার মরুভূমিতে বাস করত। টিকে থাকার অদম্য ক্ষমতা তাদের আজকের দিনেও জীবন্ত করে রেখেছে। অন্য প্রাণী যেখানে হাল ছেড়ে দেয়, গাধা সেখানে নিজের কাজে অবিচল থাকে।
🔍 সম্মান দিন, অবজ্ঞা নয়
বিশ্ব গাধা দিবসে আমাদের ভাবা উচিত, আমরা যাকে “গাধা” বলে তাচ্ছিল্য করি, সে কিন্তু পরিশ্রম, ধৈর্য আর বিশ্বস্ততার প্রতীক। তাই আজ যদি কেউ আপনাকে গাধার সঙ্গে তুলনা করে, রাগ নয়—বরং মনে করুন, এটি এক শ্রদ্ধার প্রতীক!
📌 বিশেষ বার্তা:
এই বিশ্ব গাধা দিবসে আসুন—এই প্রাণীটির প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাই। ব্যঙ্গ নয়, সম্মান হোক গাধার প্রাপ্য।