মোঃ বাদশা প্রামানিক, নীলফামারী প্রতিনিধি:
ভারতের গজলডোবা ব্যারেজের সব জলকপাট খুলে দেওয়া ও উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বাড়তে থাকে। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরে সন্ধ্যা ছয়টায় পানি কমতে শুরু করে, তবে এখনও বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই, পূর্ব ছাতনাই, খগাখাড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাপানি, ঝুনাগাছ চাপানি ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
অবিরাম পানি বৃদ্ধির কারণে নদীতে নতুন নতুন চ্যানেল সৃষ্টি হয়ে সহস্রাধিক একর আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। শতাধিক পরিবার গৃহহীন ও ভূমিহীন হয়ে পড়েছে। চরবাসীরা গবাদিপশু ও মালপত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পাড়ি জমাচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে এটি চতুর্থবারের মতো তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করল। এর আগে ২৯ জুলাই, ৩ আগস্ট ও ১২ আগস্ট এ নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছিল।
স্থানীয়রা জানান, তিস্তার ভাঙনে ইতিমধ্যে অসংখ্য গ্রাম মানচিত্র থেকে মুছে গেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, মসজিদ-মাদ্রাসা পর্যন্ত হুমকির মুখে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরানুজ্জামান জানান, দুর্গতদের জন্য ১০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে, যা বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া আরও ১৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। শুকনো খাবার ও ত্রাণ সামগ্রী মজুত রয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সালামত ফকির বলেন, “উজানের ঢল ও প্রবল বর্ষণের কারণে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে এবং আমরা সর্বদা সতর্ক অবস্থায় আছি।”