আক্কাছ আলী, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দিঘীরপাড় ইউনিয়নের পদ্মার ছোট শাখা নদীর দক্ষিণ পাড়ের ৩ ও ৯ নং ওয়ার্ডের গ্রামগুলো আজও বঞ্চিত শিক্ষা এবং যোগাযোগের মৌলিক সুযোগ-সুবিধা থেকে। পাকা রাস্তার অভাব এবং কোনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় এসব গ্রামের শিশুরা ঝরে পড়ছে শিক্ষার মূল স্রোত থেকে।
শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত শিশুরা
বিদ্যালয়ের অভাবে গ্রামের শিশুরা প্রতিদিন ৪-৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কাদামাটির রাস্তায় এবং নৌকার সাহায্যে স্কুলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এই দীর্ঘ ও কষ্টকর পথ অতিক্রম করতে না পেরে অনেক শিশু বিদ্যালয়ে যেতে চায় না, ফলে ঝরে পড়ার হার বাড়ছে।
স্থানীয় কৃষক মোতালেব মোল্লা জানান,
“আমাদের গ্রামে প্রায় হাজার পরিবারের বসবাস। প্রতিটি ঘরে দুই-তিনটি শিশু আছে, কিন্তু তাদের জন্য নিকটবর্তী কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এখানকার শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একটি স্কুলের জন্য আমরা দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছি।”
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা খাদিজা বেগম বলেন,
“আমরা মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেও সন্তানদের শিক্ষার সুযোগ নেই। এখানে একটি স্কুল স্থাপন হলে আমাদের শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা কমত।”
যোগাযোগ ব্যবস্থার সংকট
এই গ্রামের মানুষ শরীয়তপুরের নড়িয়া, সখিপুর এবং কাঁচিকাটা নওপাড়ার সঙ্গে সংযুক্ত। কিন্তু উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় এখানকার মানুষ নৌকার ওপরই নির্ভরশীল। রাস্তাঘাটের অবকাঠামো উন্নয়নের অভাব শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি
টঙ্গীবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,
“আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করব।”
স্থানীয়দের দাবি
স্থানীয় বাসিন্দারা গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রশাসনের কাছে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে এই অঞ্চলের শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে আরও বঞ্চিত হয়ে পড়বে।