মো: রাহিম হোসেন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাসিরাবাদ দুলাহার উচ্চ বিদ্যালয় এখন কার্যত মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়া মাটির তৈরি ঘরেই চলছে শ্রেণি কার্যক্রম, যেখানে প্রতিদিন প্রাণ ঝুঁকিতে পড়ছে শতাধিক শিক্ষার্থী।
গত ১৬ মে শুক্রবার দিবাগত রাতে ঘূর্ণিঝড় ও কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যালয়ের তিনটি ঘরের মধ্যে দুটি ঘরের টিনসেট সম্পূর্ণভাবে উড়ে যায়। ভেঙে পড়ে দরজা, জানালা, ফ্যান, টেবিল, চেয়ার, বেঞ্চ এবং বিদ্যুতের সংযোগসহ প্রায় সবকিছু। দীর্ঘদিন ধরে মাটির তৈরি এই ঘরেই চলছিল পাঠদান। আধুনিক যুগে এসে এমন ব্যবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রম চালানো কল্পনাতীত হলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অকিল চন্দ্র বর্মন বলেন, “১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়ে ৫২ বছর ধরে মাটির ঘরেই পাঠদান চলছে। আশেপাশের বিদ্যালয়গুলোতে একের পর এক নতুন বিল্ডিং হলেও আমাদের ভাগ্যে তা জোটেনি। সম্প্রতি ঝড়ে যেভাবে ঘরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাতে পাঠদান চালানো তো দূরের কথা, যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।”
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, বিদ্যালয় মেরামত বা নতুন ভবন নির্মাণের জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত অর্থ নেই। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আকুতি, দ্রুত সরকারি সহায়তা না পেলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে শিক্ষা কার্যক্রম।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপজেলাপ্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, বিদ্যালয়টি নতুন করে নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হবে দ্রুত। একইসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা।
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড—কিন্তু সেই মেরুদণ্ড যখন ঝুঁকির মুখে থাকে, তখন প্রশ্ন ওঠে উন্নয়নের টেকসইতাই বা কোথায়? নাচোলের এই বিদ্যালয়ের দিকে এখনই নজর না দিলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে—যার দায় এড়ানো কঠিন হবে সংশ্লিষ্টদের পক্ষে।