মাসফিকুল হাসান, বেরোবি প্রতিনিধি:
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত শিক্ষার্থীদের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়। মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া চত্বরে শিক্ষার্থীরা এ দাবিতে মানববন্ধন করেন।
বক্তারা অভিযোগ করেন, শহীদ আবু সাঈদের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অত্যন্ত হালকা এবং অপর্যাপ্ত। ১০৯তম সিন্ডিকেট সভায় ৭১ জন অভিযুক্তকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলেও শিক্ষার্থীদের দাবি, তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার এবং হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৭১ জন অভিযুক্তের মধ্যে ১৫ জনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া ৩৩ জনকে দুই সেমিস্টার এবং ২৩ জনকে এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্তকে “হাস্যকর ও অন্যায্য” বলে আখ্যা দেন।
মানববন্ধনে স্লোগান উঠে, “হা হা হাস্যকর! র্যাগিং এ বহিষ্কার, মেরে ফেললে সেমিস্টার। প্রশাসনের এই বিচার মানি না।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস এম আশিকুর রহমান বলেন, “তিন দিনের মধ্যে অভিযুক্ত ৭১ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা না হলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেব।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “হত্যাকাণ্ডে জড়িত অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী এখনো দায়িত্ব পালন করছেন, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়।”
আরেক নেতা শামসুর রহমান সুমন বলেন, “ভিসি আমাদের সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু ছয় মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরও প্রশাসনের এই লঘু শাস্তি গ্রহণযোগ্য নয়।”
শিক্ষার্থী সুমাইয়া ইসলাম বলেন, “অভিযুক্তরা এখনো ক্লাস ও পরীক্ষা দিচ্ছেন। তারা মুখোশ পরে নিজেদের অপরাধ আড়াল করছে। এছাড়া প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, তাদেরও আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।”
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।