April 16, 2025, 3:00 pm

“তালতলীতে ভয়াবহ আগুন: ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতিতে পথে বসলো ৪৩ পরিবার”

এইচ বি সুমন আলী

স্টাফ রিপোর্টার, বরগুনা

বরগুনার তালতলীতে কড়াইবাড়িয়া বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৯টি দোকান ও ৪টি বসতঘর সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়েছে। এছাড়া আরও ৫টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় দোকান মালিক, ভাড়াটিয়া ও পরিবারের সদস্যসহ মোট ৪৩টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ কোটি টাকা বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।

রবিবার (১৩ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনের সূত্রপাত হয় মো. বশিরের একটি পেট্রোলের দোকান থেকে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের দোকান ও বসতঘরে।

ফায়ার সার্ভিসের ‘গাফিলতি’ নিয়ে ক্ষোভ
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তালতলী ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হলেও তারা পানি ছাড়া ঘটনাস্থলে হাজির হয়। পরবর্তীতে পাশের ডোবা থেকে মেশিনে পানি দেওয়ার চেষ্টা করলেও জ্বালানি না থাকায় ব্যর্থ হয় সেই প্রচেষ্টাও। পরে আমতলী ফায়ার সার্ভিস এসে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে দোকানগুলো ছাই হয়ে যায়।

ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীদের দাবি— পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দাবি, এটি একটি পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড এবং ফায়ার সার্ভিসের অবহেলার কারণেই ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে গেছে।
ব্যবসায়ী ইব্রাহিম বীপরাজ বলেন,

“ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের গাফিলতির কারণেই এমন ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। যদি তারা প্রস্তুত থাকতেন, তাহলে এত বড় ক্ষতি হতো না। এর দায় তাদেরই নিতে হবে।”

প্রশাসনের বক্তব্য
তালতলী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার এস এম নুরুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,

“স্থানীয়রা আমাদের পাইপ কচুরিপানায় ভর্তি পুকুরে ফেলেছিল, ফলে পাইপ বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের পর্যাপ্ত তৈল ছিল, তৈল না থাকার অভিযোগ সত্য নয়।”

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন,

“আমি রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। ফায়ার সার্ভিসের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

রাজনৈতিক নেতাদের পরিদর্শন
ঘটনার পর রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানা পুলিশ, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।

চরম ক্ষতির মুখে পরিবারগুলো
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহীম সিকদার পনু বলেন,

“এত বড় অগ্নিকাণ্ড আগে ঘটেনি। ব্যবসায়ীরা সবকিছু হারিয়ে এখন নিঃস্ব। যদি ফায়ার সার্ভিস সময়মতো কার্যকর ব্যবস্থা নিত, তবে ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হতো।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


আমাদের পেজ লাইক করুন