নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভোলা থেকে গ্যাস পরিবহন বন্ধ থাকায় ঢাকা, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তত ১৩টি কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয়দের বাধার কারণে টানা ১০ দিন ধরে গ্যাস পরিবহন বন্ধ রয়েছে। ফলে বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার করে উৎপাদন চালিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে কারখানাগুলো, যার ফলে ব্যয়ও বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।
ভোলার গ্যাসক্ষেত্রের সাথে সরাসরি কোনো জাতীয় পাইপলাইন সংযোগ না থাকায়, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন সরকারের সাথে চুক্তির আওতায় নৌ ও সড়কপথে গ্যাস সরবরাহ করে আসছিল। কিন্তু স্থানীয়ভাবে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরতরা গত ১৮ ও ১৯ এপ্রিল ইন্ট্রাকোর গ্যাস বহনকারী গাড়ি আটকে দেয়। গাড়ি ছেড়ে দিলেও, পরে স্থানীয় বাধার কারণে গ্যাস পরিবহন বন্ধ রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের ফকির ফ্যাশনের হেড অব সাপ্লাই চেইন মো. গোলাম মোস্তাফা জানান, প্রতিদিন গড়ে ১৭ হাজার ঘনমিটার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় দিনে প্রায় ১০ লাখ টাকা ক্ষতি হচ্ছে এবং সময়মতো পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। একইভাবে, সাভারের আল মুসলিম গ্রুপেও উৎপাদন ব্যয় দ্বিগুণ বেড়ে গেছে বলে জানা গেছে।
ইন্ট্রাকোর মহাব্যবস্থাপক কমান্ডার আবু সাঈদ বিএন (অব.) জানান, তারা প্রতিদিন গড়ে ৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতেন, যা এখন বন্ধ রয়েছে। কারখানার মালিকরা জরুরি ভিত্তিতে গ্যাস চাইলেও সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের তথ্য মতে, ভোলার গ্যাসক্ষেত্রে দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট হলেও ব্যবহার হচ্ছে মাত্র ৭০-৮০ মিলিয়ন ঘনফুট। ফলে বিপুল পরিমাণ গ্যাস অব্যবহৃত থাকছে। জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযোগ না থাকায় এই গ্যাস কার্যকরভাবে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। অথচ দেশে দৈনিক প্রায় ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও, সরবরাহ করা যাচ্ছে সর্বোচ্চ ২৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা দ্রুত সমাধানের আশা প্রকাশ করেছেন।
সূত্র: মানবজমিন