August 3, 2025, 3:08 am
শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার সম্পুর্ণ খরচ দেবে বিল গেটস স্কলারশিপ, আবেদন চলছে রাজবাড়ীতে ৩১ কৃতি শিক্ষার্থী পেল এসইডিপি সম্মাননা ও অর্থ সহায়তা সুনামগঞ্জের ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার পুলিশের বিশেষ অভিযানে মুন্সিগঞ্জে অবৈধ বালু উত্তোলনে গ্রামবাসীর ধাওয়া, ড্রেজারে আগুন! স্কুলের সামনে হাঁটুসমান পানি—দুর্ভোগে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা! সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নিলেন সমন্বয়ক — বললেন, ভুল করিনি! জামালপুরের ইসলামপুরে বিভাগীয় কমিশনারের মতবিনিময় সভা টঙ্গীতে ড্রেনে পড়ে নিখোঁজ নারী, ৩৬ ঘণ্টা পর মিললো মরদেহ কেশবপুরে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত মেধাবীদের ইসলামি ছাত্র শিবিরের সংবর্ধনা লাশ লাগলে লাশ নে, বাজেট দে”—উত্তাল রংপুর মডার্ন মোড়

শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও লুটপাটের প্রমাণ মিলেছে

মিরাজ হুসেন প্লাবন

ছাতক, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের ছাতকে চরমহল্লা ইউপির হাজী আব্দুল খালিক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মোস্তাক আহমদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। তদন্তে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

তদন্তে ফাঁস প্রধান শিক্ষক

তদন্ত প্রতিবেদনে প্রধান শিক্ষকের জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরে বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা চালাচ্ছেন অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক।

গত ৭ অক্টোবর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গ্রামের সিরাজুল হক, শিক্ষার্থী আদদান সানী, মইন উদ্দিন ও শিউলী বেগম পৃথক চারটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

তদন্তের অগ্রগতি

অভিযোগের ভিত্তিতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, যা গত ১৯ নভেম্বর সরেজমিন তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে, ১০ ডিসেম্বর অধিকতর তদন্তের স্বার্থে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং প্রয়োজনীয় প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়।

ব্যাংক লেনদেন ও হিসাবের গরমিল

জানা গেছে, বিদ্যালয়ের অগ্রণী ব্যাংক অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ১০ লাখ ৭১ হাজার ৩০ টাকা জমা হয়। বিভিন্ন সময়ে প্রধান শিক্ষক ৮ লাখ ৬ হাজার ৩৩ টাকা উত্তোলন করেন, ফলে ব্যাংকে বর্তমানে মাত্র ১ লাখ টাকা রয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের নিরীক্ষা কমিটির হিসাব অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ২ লাখ ৬০ হাজার ২০৩ টাকা পাওনা থাকার তথ্য উঠে এসেছে।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি ফি বাবদ আদায় করা অর্থের কোনো হিসাব নেই। এছাড়া, সিকিউরিটি বাবদ ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে আদায়ের মাধ্যমে প্রায় ১৫ লাখ টাকার গরমিল ধরা পড়েছে। প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়টিও প্রমাণিত হয়েছে।

ক্ষমতার অপব্যবহার ও হুমকি

প্রধান শিক্ষক মোস্তাক আহমদ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয়ের হিসাব না দিয়ে, সাবেক এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের আত্মীয় পরিচয় ব্যবহার করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে হুমকি ও ভয়ভীতির মাধ্যমে বিরোধীদের দমন করারও তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনি অনিয়মিত হাজিরা দিয়েও মাস শেষে পুরো বেতন উত্তোলন করেছেন। এসব ঘটনার ভিত্তিতে গত ২ মার্চ তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপ ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রশাসনের মন্তব্য

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, “প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত প্রতিবেদন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, সিলেটে পাঠানো হয়েছে।”

এ বিষয়ে তদন্তের পরবর্তী ধাপে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


আমাদের পেজ লাইক করুন