আক্কাছ আলী, মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
“আমাদের এখানে মোটামুটি একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে—খুব তাড়াতাড়ি একটা মেডিক্যাল কলেজ করা যায় কি না, সেই চেষ্টা করছি। হয়তো এক মাস বা দুই মাসের মধ্যেই মেডিকেল কলেজ উদ্বোধন করা যাবে”—এমন আশাবাদী মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সোমবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বিশেষ উন্নয়ন সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তিনি। সভায় জেলার সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সভায় উপস্থিত ছিলেন শিল্প ও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, নৌবাহিনীর প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসানসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
সভায় আলোচিত অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর মধ্যে ছিল—মুন্সিগঞ্জের ভাঙ্গা রাস্তা মেরামত, কুন্ডেরবাজার ব্রিজ ও দিঘিরপাড় সেতুর উন্নয়ন, পুড়ে যাওয়া পৌরভবন ও শিল্পকলা একাডেমির সংস্কার, কাটাখালী খাল পুনঃসংস্কার এবং মাওয়া ফেরিঘাট অঞ্চলের উন্নয়ন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত। এ সময় মুন্সিগঞ্জের ঐতিহাসিক ভ্রমণবই “প্রত্নকথা”-এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
মুন্সিগঞ্জে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনকে ঘিরে সভায় তুলে ধরা হয় এর যৌক্তিকতা ও সম্ভাব্যতা। সভায় জানানো হয়, ২৫০ শয্যার মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল কম্পাউন্ডেই মেডিক্যাল কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি পুরনো কাছারী এলাকায় আবাসিক ভবন ও মাঠ নির্মাণ নিয়েও আলোচনা হয়।
সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুরুল আলম বলেন, “প্রাচীন সভ্যতার জনপদ মুন্সিগঞ্জে অবশেষে মেডিকেল কলেজ বাস্তবায়নের পথে। এটি এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল।”
ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. জাহাঙ্গীর আলম সভায় বলেন, “ঢাকার পাশে অবস্থিত মুন্সিগঞ্জে মেডিকেল কলেজ ও সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন এখন সময়ের দাবি। রাজধানীর চাপ কমাতে এর গুরুত্ব অপরিসীম।”
মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. দেওয়ান নিজামউদ্দিন হেলাল বলেন, “মুন্সিগঞ্জে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দাবি বহুদিনের। ভৌগলিক কারণেই এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রাণের দাবি এখন বাস্তবায়নের পথে।”
সভায় মেডিকেল কলেজের ফিজিবিলিটি, অবকাঠামো ও বাস্তবায়ন পরিকল্পনা নিয়ে সফল আলোচনা হয়। উপদেষ্টা জানান, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোর নিয়মিত ফলোআপ ও দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।