June 16, 2025, 9:53 pm

৫ কোটি ঘনফুট অবৈধ বালু উত্তোলনে ক্ষতি ১৫০০ কোটি টাকা

মিরাজ হুসেন প্লাবন

সুমন আহমদ, সিলেট প্রতিনিধি:

সিলেটের জাফলং জিরো পয়েন্ট, ডাউকি নদী, বলির হাওর, বাংলাবাজার ও বুধিগাঁও হাওরসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল সরকার ঘোষিত “পরিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এলাকা (ECA)” হলেও সেখানে অব্যাহতভাবে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন। সরকারি কোনো ইজারা ছাড়াই ড্রেজার মেশিন বসিয়ে পাঁচ কোটি ঘনফুটেরও বেশি বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে এক পরিবেশকর্মীর স্মারকলিপিতে।

এ বিষয়ে “নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন”–এর গোয়াইনঘাট উপজেলা শাখার আহ্বায়ক আজম হোসেন জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। স্মারকলিপিতে বলা হয়, দিনের পর দিন ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে তা নদীর পাড়ে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে এবং নিয়মিত লোডার, নৌকা ও ট্রাকে করে বিক্রি করা হচ্ছে।

প্রশাসনের একাধিক অভিযান চালানো সত্ত্বেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এই কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়নি। অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে নদীর তীর, প্রাকৃতিক বাঁধ ও জলাধার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, হুমকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্য ও স্থানীয় পরিবেশ।

আজম হোসেন অভিযোগে বলেন, “প্রশাসন কয়েকবার অভিযান চালালেও কার্যকর ফল আসেনি। দুর্বৃত্তরা প্রকাশ্যে আইন ভেঙে বালু তুলছে এবং আদালতের আদেশ উপেক্ষা করছে। পরিবেশ ধ্বংস করে তারা বাণিজ্য করছে। এভাবে চলতে থাকলে ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।”

বাংলাদেশের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (২০১৯), বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন (২০১০, সংশোধিত ২০২৩), এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী, ECA ঘোষিত এলাকায় কোনো খনন বা ভৌগলিক পরিবর্তন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু এসব আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে প্রকাশ্য দস্যুতা।

আজম হোসেন তাঁর স্মারকলিপিতে দাবি করেন:

অবৈধভাবে উত্তোলিত বালুর স্তূপ অবিলম্বে জব্দ করতে হবে।

ড্রেজারসহ সমস্ত অবৈধ যন্ত্রপাতি অপসারণ করতে হবে।

বালু দস্যু ও সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

ভবিষ্যতে ECA এলাকায় এ ধরনের পরিবেশবিধ্বংসী কর্মকাণ্ড যেন না ঘটে, সে জন্য প্রশাসনিক নজরদারি জোরদার করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, “আমার দাবি পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে। আমি কোনো রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত ফায়দার জন্য কিছু বলছি না। দেশের আইন, সংবিধান ও আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে কেউ বালু তুলতে পারে না। প্রশাসনের দায়িত্বশীল নজর না পড়লে সামনে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে।”

স্মারকলিপি প্রদানের তারিখ: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
পরিবেশকর্মী: আজম হোসেন, আহ্বায়ক, নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন, গোয়াইনঘাট।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


আমাদের পেজ লাইক করুন