আক্কাছ আলী, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ মুন্সীগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে, ১১ ডিসেম্বর, মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত প্রতিরোধে এবং মিত্র বাহিনীর সহযোগিতায় পাক হানাদার বাহিনী মুন্সীগঞ্জ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। এই দিনটি স্মরণ করে মুন্সীগঞ্জবাসী বিজয়ের আনন্দে পথেঘাটে নেমে আসে।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে মুন্সীগঞ্জ
৪ ডিসেম্বর রতনপুর ও আশপাশের এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের সাহসী অভিযানের ফলে পাক হানাদার বাহিনী সঙ্কটে পড়ে। মিত্র বাহিনীর বিমান হামলায় ধলেশ্বরী নদীতে পাক সেনাদের তিনটি গানবোট ধ্বংস হয়। চূড়ান্ত প্রতিরোধের মুখে ১০ ডিসেম্বর গভীর রাতে হরগঙ্গা কলেজ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যায় হানাদার বাহিনী।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, জেলার বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত প্রতিরোধ যুদ্ধের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা মুন্সীগঞ্জকে হানাদারমুক্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়। ৪ ডিসেম্বরের যুদ্ধে মিত্র বাহিনীর সহায়তায় পাক সেনাদের কার্যত নির্মূল করা হয়। ১১ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে প্রবেশ করে বিজয়ের পতাকা ওড়ে।
মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা
মুন্সীগঞ্জের মুক্তিযুদ্ধ ছিল দেশের জন্য এক গৌরবময় অধ্যায়। এই যুদ্ধে মিত্র বাহিনীর সহযোগিতায় হাজারো মুক্তিযোদ্ধা শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়লাভ করে। যুদ্ধের শুরুর দিকে পাক সেনারা ধলেশ্বরী নদী পাড়ি দিয়ে মুন্সীগঞ্জ শহরে প্রবেশ করলেও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধে টিকতে পারেনি।
দিবস উদযাপন
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন দিবসটি উদযাপনের জন্য পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও দোয়া মোনাজাতসহ নানা আয়োজন করেছে। দিনটি মুন্সীগঞ্জের মুক্তিকামী মানুষের মনে গৌরব ও বিজয়ের স্মারক হয়ে থাকবে।
আজকের এই দিনটি শুধুমাত্র মুন্সীগঞ্জের নয়, গোটা জাতির জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের প্রতীক। মুক্তির আনন্দে আজও স্মরণ করা হয় সেই সব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের, যাদের ত্যাগ ও সাহসিকতায় মুন্সীগঞ্জ শত্রুমুক্ত হয়েছিল।