মিজানুর রহমান মিলন, (বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার কামারপাড়া পূর্বপাড়া গ্রামে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে স্বামীর বাড়ি থেকে মনজেলা খাতুন (২০) নামে ওই নারীর গলায় ওড়না পেঁচানো লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
নিহত মনজেলা একই গ্রামের তুহিন বাবু (২১)-এর স্ত্রী এবং কামারপাড়া মন্ডলপাড়া গ্রামের রাজিবুল প্রামাণিকের মেয়ে। দুই বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের ভিত্তিতে উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়। স্থানীয় দরিকুল্লা বাজারে ভাজি ও পুরি বিক্রি করে সংসার চালাতেন তুহিন।
নিহত নারীর শ্বশুরবাড়ি দাবি করেছে, এটি আত্মহত্যা। তবে তারা আত্মহত্যার কারণ জানাতে পারেনি। অন্যদিকে, মনজেলার বাবা-মা অভিযোগ করেছেন, তাদের মেয়েকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। নিহতের শরীরে পাঁজরে আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন স্থানীয় কয়েকজন নারী। গলায় থাকা সোনার চেইন ও কানের দুলও লাশের সঙ্গে পাওয়া যায়নি।
নিহতের পিতা রাজিবুল প্রামাণিক জানান, বিকেল ৫টার দিকে শ্বশুরবাড়ি থেকে ফোনে মেয়ের অসুস্থতার খবর পান। ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন এবং শরীরে আঘাতের চিহ্ন পান। তিনি দাবি করেন, এটি হত্যাকাণ্ড।
মনজেলার শাশুড়ি মমতাজ খাতুন জানান, তিনি বিকেল ৪টার দিকে ঘরে ঢুকে মনজেলাকে ঘরের তীরের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। চিৎকার করলে বাড়ির লোকজন এসে লাশ নামায়। মনজেলার কাশি রোগ ছিল এবং তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে জানান তিনি। তার দাবি, মানসিক চাপে মনজেলা আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন।
শাজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ বলেন, প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। লাশের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা সদস্য সালমা খাতুনসহ কয়েকজন নারী জানান, তারা লাশের পাঁজরে আঘাতের চিহ্ন দেখেছেন।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এদিকে, ঘটনার পর থেকে মনজেলার স্বামী তুহিন পলাতক রয়েছেন এবং তার মোবাইল ফোন বন্ধ।
নিহত মনজেলার এই রহস্যজনক মৃত্যু এলাকাবাসীর মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন ও বিচার দাবি করেছেন তারা।