তরিকুল ইসলাম, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে উপ-রেজিস্ট্রার ফারজানা ইসলামকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে রবিবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুর ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তিনি উপ-রেজিস্ট্রার পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতা করে তিনি বিক্ষোভ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন এবং বিভিন্ন ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেন। ৫ আগস্ট এসব মন্তব্যের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হয়, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করে। পরে শিক্ষার্থীরা তার বিচারের দাবিতে ভিসি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আল মাহমুদ বলেন, “তিনি ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতা করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার জন্য উস্কানি দিয়েছেন। তার মদদেই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। এরাই বিশ্ববিদ্যালয়কে দলীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
ফার্মেসি বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ওবায়দুল ইসলাম বলেন, “এরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অপকর্মের মূল হোতা। এদের দাপটে আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারতাম না। বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারের জন্য তাকে দ্রুত বহিষ্কার করা উচিত।”
প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজীব এই বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক মো. মাহবুবুল আলম জানান, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি নজরদারি করছে এবং ভিসি স্যারকে অবহিত করা হয়েছে।”
রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান বলেন, “ভিসি এবং প্রো-ভিসি মন্ত্রণালয়ের কাজে ব্যস্ত আছেন। তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
শিক্ষার্থীরা উপ-রেজিস্ট্রারের গ্রেফতারকে প্রশাসনিক সংস্কারের সূচনা হিসেবে দেখছেন। তারা দাবি করেন, ক্যাম্পাসের স্বাধীন পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
এই ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলমান উত্তেজনার নতুন মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে।