কুকুর নিয়ে আমাদের সমাজে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত গুজব হলো, কুকুর কামড়ালেই নাকি জলাতঙ্ক (র্যাবিস) হবে এবং নাভির নিচে ১৪টি ইনজেকশন নিতে হবে। আসলে, এসব ধারণা এখন সম্পূর্ণ ভুল।
কুকুর কেন কামড় দেয়?
কুকুর স্বভাবতই আক্রমণাত্মক নয়। তবে তাদের উত্যক্ত করলে, ভয় দেখালে, বা মারধর করলে আত্মরক্ষার্থে তারা কামড় বা আঁচড় দিতে পারে। এটা একেবারেই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। তাই কুকুর দেখামাত্র আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
কামড়ালেই কি জলাতঙ্ক হবে?
সব কুকুরের শরীরে র্যাবিস ভাইরাস থাকে না। শুধুমাত্র জলাতঙ্কে আক্রান্ত কুকুরের কামড়েই র্যাবিস সংক্রমিত হতে পারে। ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে প্রাণীদের নিয়মিত টিকাদানের ফলে জলাতঙ্ক আক্রান্ত কুকুরের সংখ্যা অনেক কমেছে। এটি আরও কমিয়ে আনতে প্রাণীদের সঠিকভাবে টিকাদান নিশ্চিত করা জরুরি।
কুকুর কামড়ালে কী করবেন?
১. ক্ষতস্থান দ্রুত পরিষ্কার করুন:
কামড়ানোর সাথে সাথেই ক্ষতস্থান ক্ষারযুক্ত সাবান ও পরিষ্কার পানি দিয়ে কমপক্ষে ১৫ মিনিট ধুয়ে ফেলুন। এতে ৯০% জীবাণু ধ্বংস হয়ে যায় এবং সংক্রমণের ঝুঁকি ৭০-৮০% কমে যায়।
২. টিকা নিন:
কাছের হাসপাতালে গিয়ে জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা নিন। টিকা সময়মতো নিলে মৃত্যু বা জলাতঙ্কের শঙ্কা দূর হয়।
জনসচেতনতা ছড়ান
কুকুর নিয়ে ভুল ধারণা এবং গুজব ছড়ানোর পরিবর্তে সঠিক তথ্য প্রচার করা উচিত। জলাতঙ্ক একটি ভয়াবহ রোগ হলেও এটি প্রতিরোধযোগ্য। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার না করে, সঠিক তথ্য দিয়ে জনসচেতনতা বাড়ান।
কুকুরের প্রতি দায়িত্বশীল হোন
রাস্তার প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতিশীল আচরণ করুন। তাদের টিকাদান নিশ্চিত করলে জলাতঙ্কের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে। আমাদের সকলের দায়িত্ব হলো, তাদের প্রতি সহমর্মী হওয়া এবং জলাতঙ্ক প্রতিরোধে সচেতনতা ছড়ানো।
আসুন, গুজব নয়—সঠিক তথ্য ছড়িয়ে জীবন বাঁচাই।