যুক্তরাষ্ট্রে স্টুডেন্ট ও এক্সচেঞ্জ ভিসার আবেদনকারীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলবিরোধী মনোভাব পোষণকারীদের দেশটিতে প্রবেশ ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২৫ মার্চ দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলোতে পাঠানো একটি বিস্তারিত বার্তায় এই নির্দেশনা দেন রুবিও। তার এই নির্দেশ আসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশের প্রেক্ষিতে, যার মাধ্যমে কিছু বিদেশিকে বহিষ্কারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। আদেশে বলা হয়, যেসব ব্যক্তিরা “মার্কিন নাগরিক, সংস্কৃতি, সরকার, প্রতিষ্ঠান বা এর মূলনীতির প্রতি বৈরী মনোভাব পোষণ করেন” – তারা এই তালিকায় পড়বেন।
রুবিওর নতুন নির্দেশনায় বলা হয়, প্রতারণা প্রতিরোধ ইউনিট (Fraud Prevention Unit) শিক্ষার্থীদের ভিসা আবেদন যাচাইয়ের সময় তাদের সোশ্যাল মিডিয়া তৎপরতা খতিয়ে দেখবে। যদি কোনো আবেদনকারীর পোস্ট বা কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী বা ইহুদিবিরোধী মনোভাবের ইঙ্গিত পাওয়া যায়, তাহলে তাকে ভিসা দেওয়ার অযোগ্য বিবেচনা করা হবে।
বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে ৩১ আগস্ট ২০২৪-এর মধ্যে যারা শিক্ষার্থী বা এক্সচেঞ্জ ভিসা পেয়েছেন, কিংবা যাদের এই সময়ের মধ্যে ভিসা বাতিল করা হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, গাজায় চলমান যুদ্ধের সময় ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের টার্গেট করতেই মূলত এই নজরদারির উদ্যোগ।
রুবিও বলেন, “আমরা আমাদের দেশে এমন কাউকে চাই না, যারা অপরাধ করবে বা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে। বিশেষ করে যারা অতিথি হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসছে, তাদের বিষয়ে আমাদের আরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন।”
এই নির্দেশনায় আরও বলা হয়, যেসব আবেদনকারী “মার্কিন সংস্কৃতির প্রতি বৈরী মনোভাব পোষণ করেন” – তাদের ভিসা বাতিলের বিষয়েও দূতাবাসগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থী ও এক্সচেঞ্জ ভিসাগুলোর ক্ষেত্রে বিশেষ নজরদারির বিষয়টি স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকারকর্মী ও শিক্ষার্থীরা। তাদের মতে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর এটা একটি বড় হুমকি হতে পারে এবং এটি নির্দিষ্ট মতাদর্শের শিক্ষার্থীদের হয়রানির একটি হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।